ঢাকাঃ নিত্যপণ্যের খুচরা বাজারে একদিনেই (শুক্রবারের তুলনায় শনিবার) বেড়েছে পাঁচটি পণ্যের দাম। এগুলো হচ্ছে- চাল, ভোজ্যতেল, প্যাকেটজাত ময়দা, ধনে ও তেজপাতা।
শনিবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত দৈনিক বাজার পণ্যমূল্য তালিকায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
টিসিবি এই তালিকা তৈরি করতে শাহজাহানপুর, মালিবাগ, কারওয়ান বাজার, বাদামতলী, সূত্রাপুর, শ্যামবাজার, কচুক্ষেত, মৌলভীবাজার, মহাখালী, উত্তরা, আজমপুর, রহমতগঞ্জ, রামপুরা ও মিরপুর-১নং খুচরা বাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে।
সংস্থাটি বলছে, একদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি সরু চাল ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। মাঝারি মানের চাল কেজিতে ৪ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া মোটা চাল কেজিতে একদিনের ব্যবধানে বিক্রি হয়েছে ২ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি দরে। পাশাপাশি প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল একদিনের ব্যবধানে ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। প্রতি লিটার পাম অয়েল সুপার বিক্রি হয়েছে ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি দরে। এছাড়া প্রতি কেজি প্যাকেটজাত ময়দার দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ। প্রতি কেজি ধনে ও তেজপাতার দাম বেড়েছে ৬ ও ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, শনিবার প্রতি কেজি সরু চাল (মিনিকেট ও নাজিরশাল) বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৬২ টাকা। যা একদিন আগে ছিল ৬০ টাকা। মাঝারি মানের চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৫৬ টাকা। যা একদিন আগে ছিল ৫২ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। যা একদিন আগে ছিল ৪৮ টাকা।
চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে কথা হয় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক ও পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে।
তিনি জানান, দেশে করোনা পরিস্থিতির প্রথম থেকেই মিলাররা কারসাজি করে চালের দাম বাড়াচ্ছে। মাঝে কিছুটা কমলেও এখন আবারও বাড়ছে। কারণ তারা জানে বন্যায় এবার আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। তাই তারা এখন থেকে আবার বাড়তি মুনাফা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। যা কোনোভাবেই ঠিক নয়। কারণ দেশে এখন চাল ও ধানের পর্যাপ্ত মজুদ আছে।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে মিল পর্যায়ে চালের দর নির্ধারণ করে দেয়া হলেও মিলাররা তা মানছে না। বেঁধে দেয়া দরের চেয়ে প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ২০০-২৫০ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি করছে। যে কারণে পাইকারি বাজারে চালের দাম বাড়তি। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে।
এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, ৩ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে খাদ্যশস্যের মোট মজুদ ছিল ১০ লাখ ৪৩ হাজার টন। এর মধ্যে চাল ৭ লাখ ৬২ হাজার টন এবং গম ২ লাখ ৮১ হাজার টন।
অন্যদিকে টিসিবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পণ্যমূল্য তালিকায় দেখা যায়, শনিবার প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ৯৫-৯৮ টাকা। যা একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৯৩-৯৭ টাকা। তবে রাজধানীর খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১০০-১০২ টাকা। শনিবার প্রতি লিটার পাম অয়েল সুপার বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৮৮ টাকা। যা একদিন আগে ছিল ৮৪ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি ধনে বিক্রি হয়েছে ১১৫ টাকা। যা একদিন আগে ছিল ১০০ টাকা। আর প্রতি কেজি তেজপাতা বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা। যা একদিন আগে ছিল ১৪০ টাকা।
রাজধানীর নয়াবাজারের মুদি দোকানি মো. শাহিন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে মিল পর্যায়ে খোলা তেলের দাম নির্ধারণ করা হলেও মিলাররা সেই দরে বিক্রি করছে না। বরং দুই দিনের ব্যবধানে আবারও দাম বাড়িয়েছে। তাই খুচরা বাজারেও দাম বেড়েছে।