রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এবার এক নারী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত নারী চিকিৎসকের নাম ডা. তানিয়া সুলতানা। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ডা. তানিয়া সুলতানা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ৪৭তম ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে এফসিপিএস পার্ট-২ এর শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় থাকতেন।

জানা যায়, চিকিৎসক তানিয়া ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে বুধবার প্রথমে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই তাকে স্থানান্তর করা হয় আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে।

ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের তথ্য বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ রাজিব সাহা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিকিৎসক তানিয়া সুলতানা মারা যান। তার লাশ স্বজনরা নিয়ে গেছেন বলেও জানান তিনি।

এর আগে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শাহাদাত হোসেন হাজরা ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

এছাড়া, গত ৩ জুলাই রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ডা. নিগার নাহিদ দিপু নামে এক নারী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়। স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ৩২ ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন ডা. নিগার। সর্বশেষ তিনি কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। সরকারি তথ্যে এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও বিভিন্ন হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এছাড়াও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীতে ভরে গেছে হাসপাতালগুলো। প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, যা আগের রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে। ২১ জুলাই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ৩১৯ জন। এরপরের তিন দিন রোগীর সংখ্যা যথাক্রমে ৪০৮, ৪৭৩ ও ৫৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তাররা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হিসাবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৪২১ জন। অবশ্য এই সংখ্যাটির চেয়ে বাস্তবে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি বলে গণমাধ্যমে তথ্য আসছে। যদিও যে সংখ্যাটি গণমাধ্যম উল্লেখ করছে, সেটা মানতে নারাজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।

এদিকে ডেঙ্গুর বিস্তারের মধ্যে উচ্চ আদালতেও এ নিয়ে শুনানি হয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আইনজীবীদের পড়তে হয়েছে তোপের মুখে। মশা নিধনে ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে ওঠা প্রশ্ন অস্বীকার করলেও দুই সিটি করপোরেশন থেকে ওষুধ পাল্টানোর ঘোষণাও এসেছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।