টাঙ্গাইলের সখিপুরে জিন তাড়ানোর কথা বলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে (১০) ধর্ষণের চেষ্টায় মসজিদের মুয়াজ্জিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবপুর গ্রামে।

এ ঘটনায় সোমবার বিকালে সখিপুর থানায় মেয়ের মা বাদী হয়ে মুয়াজ্জিনের নামে মামলাটি করেন।

অভিযুক্ত মুয়াজ্জিন রুহুল আমীন (৩০) উপজেলার কুতুবপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরে। মামলার বিষয়ে সখিপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আমির হোসেন নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বিবরণ ও মেয়েটির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বেলা দুইটার দিকে ওই মুয়াজ্জিন মেয়েটির বাড়িতে আসে। ওই স্কুলছাত্রীকে জিনে ধরেছে, তাকে ঝাড় ফুঁক দিয়ে জিন তাড়াতে হবে বলে জানান তিনি। পরে মেয়েটিকে বাড়িতে একটি ঘরে আলাদা নিয়ে ঝাড় ফুঁক দেন। ঝাড় ফুঁকের এক পর্যায়ে মেয়েটির চোখে-মুখে সরিষার তেল মেখে দিয়ে স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দেন ও ধর্ষণের চেষ্টা করেন।

এ সময় মেয়েটি চিৎকার করলে বাড়ির লোকজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী এগিয়ে আসে এবং মেয়ের কাছ থেকে ঘটনা শুনে অভিযুক্ত মুয়াজ্জিন রুহুল আমীনকে (৩০) গণপিটুনি দিয়ে বেঁধে রাখে।

এলাকাবাসীরা জানায়, স্থানীয় মাতব্বর ও সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন ও মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আবদুল আলীমের সহযোগিতায় মুয়াজ্জিন পালিয়ে যায়। তারা ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। আপোষ-মীমাংসার লক্ষ্যে এ নিয়ে এলাকায় কয়েক দফায় বৈঠকেও বসেন মাতব্বররা।

মেয়েটির মা সোমবার বিকালে সখিপুর থানায় বসে বলেন, তার মেয়ে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। পর পর দুইদিন ওই মুয়াজ্জিন বাড়িতে এসে তার মেয়েকে ঝাড় ফুঁক দিয়েছেন। ওই মুয়াজ্জিনের ব্যাপারে আরও জানান, মুয়াজ্জিন এলাকায় ঝাড়-ফুঁক, পানিপড়াসহ বিভিন্ন ধরণের কবিরাজি চিকিৎসাও করেন। এ অমানবিক ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।

দেরিতে মামলা করার বিষয়ে মেয়েটির মা জানান, তার স্বামী প্রবাসে থাকায় ঘটনাটি নিয়ে তিনি দারুণভাবে চিন্তিত হয়ে পড়েন। এলাকার মাতব্বররা নানা ধরণের প্যাঁচে ফেলেছিলেন। এ ঘটনার পর মেয়েটিও ভয়ে মাঝে মধ্যে কান্নাকাটি করে। স্কুলে য়েতে ভয় পাচ্ছে। এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপার জোর চেষ্টা চলছে। আজকে (সোমবার) মেয়েকে নিয়ে মামলা দিতে ও বিচারের জন্য থানায় এসেছেন।’

এ প্রসঙ্গে সখিপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আমির হোসেন বলেন, ‘মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত মুয়াজ্জিন রুহুল আমীনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।