ঝিনাইদহ ছয় উপজেলার হাসপাতাল গুলোতে দিন দিন রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেলেও ডাক্তারের সংকটের কারনে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। আবার হাসপাতালে শূন্য পদে কোন নিয়োগ নেই। যে কারনে গরীব ও অসহায় রোগীরা কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। এদিকে যেসব ডাক্তার সেবা দিচ্ছে তারা ঠিকমত অফিস করেন না। তারা বাইরে প্রায়ভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারে রোগি দেখে অধিক টাকা আয় করছে। যে কারনে গত ১৪ মার্চ ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ১৪ জন চিকিৎসককে শোকজ পর্যন্ত করা হয়েছে।
প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াই টা পর্যন্ত অফিস সময় হলেও ৬ উপজেলার হাসপাতালের বেশিরভাগ চিকিৎসক যথাসময়ে কর্মস্থলে উপস্থিত হন না। অনেক সময় জহরের আজান হলেই চিকিৎসকরা ক্লিনিকে নতুবা বাড়ি চোলে যায়। এছাড়া হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের রাতের বেলা রাউন্ড দেবার বিধান থাকলেও মেডিসিন, সার্জারি ও হৃদরোগের চিকিৎসকরা রাউন্ড দেন না। ফলে বেশিরভাগ জটিল রোগী রেফার্ড করে ঢাকা, ফরিদপুর, ও যশোরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ডাক্তাররা রোগিদের সেবা দেবার ভয়ে তারা অধিক সময় রোগি বাইরে পাঠানোর জন্য ব্যাস্ত থাকে।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ ৬ উপজেলায় জেলার সরকারি হাসপাতালে সাধারন মানুষের সেবা দেবার জন্য ২১১ জন ডাক্তার থাকার কথা। সেখানে রয়েছে মাত্র ৬৩ জন ডাক্তার ৬ উপজেলার হাসপাতালে কর্মরত আছেন। শূন্য পদ রয়েছে ১৪৮ জন। ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সহকারী সার্জনের ২০টি পদে কর্মরত আছেন মাত্র ৭ জন। ১৩টি পদ এখন ও শূন্য রয়েছে। এছাড়া সিভিল সার্জন অফিসে ১ জন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ৪০ জন ডাক্তারের মধ্যে ১৭ জন কর্মরত, কালীগঞ্জ হাসপাতালে ৩১ জন ডাক্তারের মধ্যে মাত্র ৭ জন, মহেশপুর ৩৪ জন ডাক্তারের মধ্যে মাত্র ৪ জন, শৈলকুপায় ২৬ জনের মধ্যে মাত্র ৭ জন, হরিণাকুন্ডুতে ৩০ জনের মধ্যে ৫ জন ও কোটচাঁদপুরে ২৬ জন ডাক্তারের মধ্যে ৮ জন কর্মরত রয়েছে। ২১১ জন ডাক্তারের কর্মস্থলে মাত্র ৬৩ জন ডাক্তার দিয়ে চিকিতসা সেবা দেওয়া হয় ৬ উপজেলার হাসপাতাল গুলোতে। ঝিনাইদহ জেলার হাসপাতাল গুলোতে এত ডাক্তার সংকটের কারনে রোগি সেবা মারাতœক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব বিষয়ে স্বাস্থ বিভাগের উপরি মহলের সুদৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। এসব শুন্য পদের স্থালে কবে নাগাদ ডাক্তার আসবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
৬ উপজেলার ৬টি হাসপাতালে ক,জন ডাক্তার রোগিদের চিকিৎসা দিতে মারাত্মক হিমসিম খাচ্ছে। সব মিলিয়ে চিকিতসা সেবা এখন মারাত্মক হুমকির মুখে। আবার হাসপাতালের খাবারের মান ও খুব নিন্মমানের। ঠিকাদাররা যে চুক্তিতে খাবার দেবার কথা ও অঙ্গিকার করে খাবার সরবরাহ কাজ নেয়। তা কোন ভাবেই নিয়ম মানে না ও খাবার দেয় না। ফলে রোগিরা বেশির ভাগ সময়ে নিজেরা খাবার এনে খেয়ে থাকে।
এসব বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ রাশেদা সুলতানা জানান, আমরা একাধিক বার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে ডাক্তার সংকট ও শূন্যপদ পূরণের কথা বলেছি। কিন্তু উপরি মহল ডাক্তার দিচ্ছে না ও পদ পূরণ হয় না। কিন্তু আমরা তার পর ও চেষ্টা করে যাচ্ছি রোগিদের সেবা দেবার জন্য।
আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা
[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]