লক্ষাধিক এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রানের দাবি বদলি।বদলি ব্যবস্থা চালু হলে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক তথা সকল স্তরের জনগণ উপকৃত হবে। একটি সুন্দর, আনন্দময় ও উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হবে।বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আটঘাট বেধে বসে থাকা একনায়কতন্ত্র দুর হবে। শিক্ষক নির্যাতন, ছাত্রছাত্রীদের প্রতি অবহেলা, তথাকথিত সিন্ডিকেট থেকে শিক্ষা তথা জাতিকে রক্ষা,পুনরুদ্ধার, পুনরুজ্জীবিত করতে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালু একান্ত জরুরি। বদলি ব্যবস্থা শুধু শিক্ষকদের জন্য নয়,বদলি ব্যবস্থা হওয়া উচিত শিক্ষক, কর্মচারী, প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সকলের।

অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়া কিংবা বিনা অপরাধে চাকরিচ্যুত, শারীরিক মানসিক নির্যাতিত হওয়া তথা একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা থেকে রক্ষা পেতে বদলি ব্যবস্থা চালু শুধু জরুরি নয় রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজনীয়। পত্রিকার পাতায় যখন দেখি শিক্ষাগুরুকে কান ধরে উঠবস করানো, প্রিন্সিপালের মাথায় মল-মুত্র ঢেলে নির্যাতন, শিক্ষকদের মেরে থেতলে দেয়া এবং রড দিয়ে পিটিয়ে হাতপা ভেঙে দেয়া হয় তখন আমার মনে হয় আদিম যুগের দাসত্ব ও দাসপ্রথার কথা। ছাত্রছাত্রী যখন আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে কাতরায়, অঙ্গহানি হয়,মৃত্যু হয় কিংবা আত্মহননের পথ বেছে নেয় আমার মনে পরে ইতিহাসের পাতায় প্রাপ্ত আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের কথা। সমস্ত প্রথা,উপপ্রথা কিংবা প্রথার প্রথা রোধে আধুনিক মানসম্মত ও যোগউপযোগি শিক্ষা ও শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করতে দ্রুত বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালু একান্ত জরুরি।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা শতভাগ বেতন পেলেও আনুসাঙ্গিক অন্যান্য ভাতা খুবই কম,অধিকাংশ ভাতা পাচ্ছেন না তার উপর আবার অতিরিক্ত কর্তন। সবমিলিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেন। তাই বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন এবং অসন্তোষ পরিলক্ষিত হচ্ছে ফলে পাঠদানে বিঘ্নিত হচ্ছে, ছাত্রছাত্রী ও জনগণ ভোগান্তির পাশাপাশি রাষ্ট্রের ক্ষতি হচ্ছে। তাই বেসরকারি শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালু হলে শিক্ষকরা যখন মায়ের কুলে ফিরে যাবে, পরিবার পরিজন নিয়ে থাকতে পারবে তখন প্রাপ্ত বেতনে ডালভাত খেয়েই পাঠদান সন্তুষ্টচিত্ত করতে পারবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মানসিক ব্যাঘাত ঘটবে না,অসন্তোষ থাকবে না।সরকার, জনগণ, ছাত্রছাত্রী উপকৃত হবে। আন্দোলন অনেকাংশ হ্রাস পাবে, পাঠদানের গতি বৃদ্ধি ও আনন্দময় পরিবেশ সর্বদা প্রফুল্লচিত্তে বিরাজমান থাকবে।
এমপিও নীতিমালা ২০১০,২০১৮ “সরকার চাইলে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালু করতে পারবেন “।

শিক্ষা ব্যবস্থা যত উন্নয়ন হয়েছে সব সরকার ও শিক্ষকদের মাধ্যমে।ম্যানেজিং কমিটির প্রয়োজন নেই বলে সরকার শিক্ষক নিয়োগ এনটিআরসিএ হাতে পু্র্ন দায়িত্ব দিয়েছেন ও ম্যানেজিং কমিটির ক্ষমতা খর্ব করেছেন।ফলে যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে সরকার প্রশংসিত হয়েছেন ও নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন।বদলি ব্যবস্থা চালু করা ও নীতিমালা প্রণয়ন নিঃসন্দেহ একটি যোগান্তকারী পদক্ষেপ যা লক্ষাধিক শিক্ষকের প্রানের দাবী।তাই বদলির ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির ক্ষমতা বাতিল করে সরকারের অধীনে অটো বদলি সিস্টেম চালু করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
বদলি ব্যবস্থা চালু হলে শিক্ষকদের অসন্তোষ অনেকাংশ কমে যাবে।

তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সচিব মহোদয়, কর্তাব্যক্তি ও নীতিনির্ধারকদের প্রতি অনুরোধ মাউশি কিংবা এনটিআরসিএ`র অধীনে সরকারীভাবে সরাসরি বদলি নীতিমালা জারী ও দ্রুত প্রজ্ঞাপন ও বাস্তবায়ন করুন।

লেখক, মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।