শিক্ষকের চড় থাপ্পড়ে ছাত্র ইমন হোসেনের (১৪) কানের পর্দা ফেটে গেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ছোট বিশাকোল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ এ ঘটনা ঘটান।

ইমন ওই বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র ও বিশাকোল গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে। সে বর্তমানে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। রোববার এ ব্যাপারে অভিভাবকরা ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

আহত শিক্ষার্থী ইমন হোসেন সোমবার সাংবাদিকদের জানায়, গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের রুটিন মোতাবেক শিক্ষক না থাকায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ নিজেই ৯ম শ্রেণির বাংলা ২য় পত্র ক্লাসে হাজির হন। তার আগে পর্যন্ত শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা ওই সময়ে চেঁচামেচি করছিল।

এ সময় প্রথম সারিতে বসা ইমন দাড়িয়ে সবাইকে চেঁচামেচি থামাতে বলে। এতে প্রধান শিক্ষক খুশি না হয়ে উল্টো ক্ষুব্ধ হন। তিনি দ্রুত তার কাছে গিয়ে মাথার চুল ধরে কানের ওপর বেশ কয়েকটি থাপ্পর মারেন ও পিঠের উপর তিনচারটি ঘুষি মারেন। এ সময় ওই শিক্ষক বলেন ‘তুই বড় মাস্তান হইছিস’। এসময় তিনি ওই শিক্ষার্থীকে আরো কিছু অশালীন ভাষায় গালাগালি করেন বলে ইমন জানায়।

এরপর ইমনের ডান কান দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে। এ সময় ইমন বাইরে গিয়ে কানের রক্ত ধুয়ে ফেলে এবং মাথায় পানি দেয়। ওই দিনই বিকালের দিকে তার কানে ব্যথা শুরু হলে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে প্রাথামিক চিকিৎসা নেয়।

কিন্তু তার কানের ব্যথা বাড়তে থাকলে শুক্রবারে নাক-কান-গলা বিশোষজ্ঞ ডাক্তার রফিকুল ইসলামকে দেখানো হয়। এ সময় ডাক্তার জানান, তার কানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। কানের ব্যথা না কমায় শনিবার তার অভিভাবকরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

এ বিষয়ে ইমনের বাবা আব্দুল মালেক বলেন, একজন শিক্ষক এভাবে আমার ছেলেকে কানের ওপর মেরে ক্ষতি করবে এটা কখনো আমি আশা করিনি। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিশাকোল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ বলেন, শ্রেণিকক্ষে বেয়াদবি করায় তাকে একটা থাপ্পর মারা হয়েছে। কিন্তু সে ঘাড় ঘুরতেই হয়তো তার কানে লেগেছে। তবে আমি তাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছি এবং বর্তমানে চিকিৎসার খোঁজ খবর রাখছি।

এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল আলম বলেন, ছাত্রকে কানে থাপ্পর মারার অভিযোগ পেয়ে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি। এরপর প্রথমেই শিক্ষার্থীকে যাথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে প্রধান শিক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।