প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে, তাদের বয়স ৫ থেকে ১১ বছর পর্যন্ত; অর্থাৎ প্রাথমিকের সব শিক্ষার্থী হচ্ছে কোমলমতি শিশু। অন্যদিকে দেশের হাইস্কুল ও কলেজগুলোয় যেসব শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে, তারা প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের থেকে বয়সে অনেক বড়।

তারপরও হাইস্কুল ও কলেজের সময়সূচির চেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সূচি অনেক বেশি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সূচি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪:৩০ পর্যন্ত। অন্যদিকে হাইস্কুল ১০টা থেকে ৪টা পর্যন্ত, কলেজে তো সময়সূচির কোনো নিয়মই মানা হয় না।

কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে যেখানে সবচেয়ে কম সময়সূচি হওয়ার কথা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, সেখানে উল্টো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সময়সূচি সবচেয়ে বেশি। এটা প্রাথমিকের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নির্মম কৌতুক নয় কি?

কোমলমতি প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের এখন শারীরিক ও মানসিক বিকাশের সর্বোৎকৃষ্ট সময়; অথচ তাদেরকে বিদ্যালয়ে দীর্ঘসময় ধরে জোর করে ধরে রাখা হচ্ছে, যা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের পথে অন্তরায়। দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়ে অবস্থান করার কারণে তারা খেলাধুলা, বিশ্রাম ও গোসল করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পায় না।

উন্নত দেশগুলোয় প্রাথমিকের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা থেকে খেলাধুলা ও অন্যান্য বিকাশমূলক কার‌্যাবলীর প্রতি বেশি গুরুত্ব ও সময় দেয়া হয়। কোমলমতি শিশুদের পাঠদান করা যে কত কঠিন, তা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই বুঝতে পারেন।

শিশু শিক্ষার্থীদের চিৎকার, হই-হুল্লোড় ও দুষ্টামি সহ্য করে যে শিক্ষকরা তাদের এত দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়ে পাঠদান করছেন; তাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা কী হয়, তা সহজে অনুমান করা যায়। শিক্ষকরাও তো মানুষ।

তাই তাদের কাছ থেকে মানসম্মত শিক্ষা পাওয়ার জন্য তাদেরও পর্যাপ্ত বিশ্রামের সময় দিতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলমান দীর্ঘ সময়সূচিতে শিক্ষকদের বিশ্রামের কোনো সুযোগ আছে কি? কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ- প্রাথমিকের কোমলমতি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কথা ভেবে দ্রুত বিদ্যালয়ের সময়সূচি কমানো হোক।

সহকারী শিক্ষক, ভীমদামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পঞ্চগড়আ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।