নড়াইল সদরের নাকশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে রাতে স্কুলের ক্লাসরুমে দেহ ব্যবসার অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার (১৫ জুন) স্কুল প্রাঙ্গণে ওই নৈশ প্রহরীসহ জড়িতদের শাস্তির দাবীতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেছে। এ ঘটনা সামাল দিতে গিয়ে নানা বাক-বিতণ্ডায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার নাগ উচ্চ রক্তচাপে অসুস্থ হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিদিনই নানা এলাকার নারী দিয়ে স্কুলে টাকার বিনিময়ে দেহ ব্যবসা চালাতো নৈশ প্রহরী লতিব সিকদার। গত বুধবার (১২জুন) রাতে এলাকাবাসী হাতে নাতে ধরে স্কুলের গেট আটকে দেয়। পরে প্রভাবশালী কিছু লোকের উপস্থিতিতে ছাড়া পায় ওই লতিব সিকদার। এ ঘটনার পরদিনই (১৩ জুন) স্কুলের প্রধান শিক্ষক ব্যবস্থাপনা কমিটির একটি সভায় ওই দপ্তরিকে সাময়িক বরখাস্ত দেখালেও সেই সভায় প্রধান শিক্ষক এবং একজন সহকারী শিক্ষক ছাড়া কারও স্বাক্ষর নেই।

এর আগে প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার নাগ জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে খবর পেয়ে ভোরে স্কুলে ছুটে আসি। এসময় স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আশরাফ সিকদার, মফিজুর রহমান, সুলতান আহম্মেদ, শরিফুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন ছিলেন। নৈশ প্রহরী আলতাপ ও তাদের কাছে ছিল। আমি সেসময়ই তাকে পুলিশে দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা করার চেষ্টা করি। না পেরে সভাপতির জিম্মায় দিয়ে চলে আসি।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী লতিব সিকদার মোবাইল ফোনে নিজের দোষ অস্বীকার করে বলেন, আমি স্কুলে ঘুমিয়ে ছিলাম। স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা এ ব্যাপারে কিছু জানি না।

স্থানীয় কয়েকজন যুবক জানায়, প্রায়ই রাতে এই স্কুলের দোতলায় দেহ ব্যবসা চালায় নৈশ প্রহরী লতিব। একেকদিন একেক জন নারী নিয়ে আসে আর প্রভাবশালীরা এসে লতিবকে টাকা দিয়ে যায়। রাতে স্কুলে যারা আসে তারা প্রভাবশালী বলে ভয়ে আমরা কথা বলি না।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আশরাফ সিকদার এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত নড়াইল সদর থানা পুলিশের এসআই রজত জানান, এই স্কুলের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরীর অপকর্মের অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় কয়েকজন জড়িত আছেন, তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।