বিদেশের গৎবাঁধা সময়ের পর সাপ্তাহে এক দিন সাহিত্য সাংস্কৃতিক সৌখিন বিলাসিতায় কিছু সময় কাটাতে পারাতাম কাজের সময়টাকে এক পাশে রেখে। দেশে নিতে হয় ছুটি। না স্বল্প সময়ের অল্প দিনের কর্ম জীবনে কবিতার আসরে যাবার ছুটি আজো নেয়া হয়নি।জ্যামের কারনে ত্রাহি ত্রাহি যখন সময়ের কাঁটা,তখন সাহিত্য সাংস্কৃতিক কর্ম উচ্চ বিলাসিতাও বটে।

দেশের শ্রম ঘন্টা বিদেশের চেয়ে বেশি, পচানব্বই থেকে সাতানব্বইয়ের ফেব্রুয়ারি আঁচ করতে না পারলেও দুই হাজার উনিশ সালের সাম্প্রতিক সময়ে লেজে গোবরে মাখামাখি কর্ম ঘন্টার সময়। সাহিত্য কর্ম শুধুই ফেসবুকিং। স্বশরিরী উপস্থিত হওয়া এক কথায় দুস্কর।হয়তো কর্ম হারানোরো ঝুঁকি। যেহেতু কর্মটা বেসরকারি এবং খন্ডকালীন অনুদানের পর্যায়ের বিষয়টা সেন্সেটিভ। প্রবাসের শ্রম জীবনের সাত কাহন নিয়ে কত বার লিখেছি তার হিসেব অগনিত বললে বেশি বলা হবে না। গুগল তার সাক্ষী।

অনুশীলন আর বাংলাদেশ কবি পরিষদের সাথে কাটে ঢাকার সাহিত্য আড্ডা।ক্রেস্ট যুগে প্রবাস থেকে অবসর কালীন সময়ে সোনার বাংলা সাহিত্য পরিষদে গিয়েছিলাম ফখরুল শাওন, তারেকের আন্তরিকতায়। এ বি এম সোহেল রশিদ ভাইয়ের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা অনুপ্রাসে কবিতার আসরে পড়া হয়েছিলো কবিতা। এছাড়া অনেকেই আমন্ত্রন জানান বিভিন্ন কবিতার সংগঠনে,তাদের সাথে আমার সময়ের হের ফেরে দুরত্ব আর গুরত্বের ব্যাবধান বিস্তর।ক্ষমা চেয়েছি মোবাইল ফোনে।

কবিতার শখ,সৌখিনতা হয়তো ফ্লাস করতে হবে গাটারের জলে। বন্ধুরা অনেকেই বিরক্ত সময় নষ্ট করি বলে। কবিতার নেশার একটা উপদ্রব আছে মগজের মাঝে।সেনবাগ নিজের এলাকায় যত দিন থাকি সেনবাগ শিল্প কলা একাডেমী,উপজেলা প্রশাসন,প্রিয় আউয়াল ভাইয়ের আমন্ত্রন,সেনবাগ লেখক ফোরাম সে এক অন্য রকম ব্যাস্ত সময়। কবিতা যেখানে আমার অকবিতা নিয়ে হাজির হই সেখানে।বাস্তবতার,মানবতার, প্রতিবাদের কথা গুলো ইনিয়ে বিনিয়ে তুলে ধরি স্বকন্ঠে মাইক্রোফোনে কবিতার ডায়াসে।সিঙ্গাপুরের বাংলার কন্ঠ সাহিত্য পরিষদ হৃদয়ের স্পন্দনে চিপে ধরে।চোখে আনে বেদনার অশ্রু সুখ স্মৃতির মিশ্রণে।

এখনো সময় থেকে সময় চুরি করতে হয় সাহিত্য সংগঠনের প্রিয় মুখের প্রিয় দর্শনের নিমিত্তে।মাইক্রোফোনের আকর্ষনে ফিরে যেতে চায় মন কবিতার ডায়াসে। স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে এসে শুক্রবার সন্ধ্যার সময়টা চুরি করে পৌঁছে গেলাম বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের তিন তলায় অনুশীলন সাহিত্য পরিষদের ১৭৪ তম সাহিত্য আড্ডায়। মহাসচিব কবি মাহাবুব খান তখন কবিতার ডায়াসে পড়ছিলেন সোনাগাজীর আগুনে খুন হওয়া নুসরাত রাফিকে মর্মস্পর্শী কবিতা। অতিথি আসনে তখন পশ্চিম বঙ্গের কবি শ্যামল সোম। কবিতা শেষে আমায় ডেকে নিলেন শ্রদ্ধেয় অতিথির পাশে।

যত দিন পরে যাই না কেন,অভিযোগ নেই অনুশীলন সাহিত্য পরিষদের কবি বন্ধুদের। কবি শিল্পী নন্দীনীর হাস্য সম্ভাষন সে কি ভুলা যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে এলেন অনুশীলন ঢাকার সভাপতি রাবেয়া রুবি।এলেন জাতীয় কবি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি টিপু রহমান।পরিচিত আর নতুন মুখের সামনে পড়লাম সাম্প্রতিক স্বরচিত কবিতা শুরুতেই হোক প্রতিবাদ।তাৎক্ষনিক দর্শক সারি আর মাহবুব ভাইয়ের অনুরোধে পড়লাম আগুনে জ্বলছে মানচিত্র। করতালি আর সাধুবাদে আনন্দিত হলাম।উপস্থাপক পড়লো দ্রোহের কবিতা।কবিতা গানের মাঝে নামাজের বিরতি। পশ্চিম বাংলার কবি বয়োজেষ্ঠ্য শ্যামল সোম শোনালেন জ্ঞান গর্ভ কথা।

সেই সাথে নকশাল,একাত্তর,মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কবিতাংশ। মাহাবুব ভাইয়ের সমালোচনায় টিপু ভাই অনলাইন এসোসিয়েশন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে গ্রুপিং সহ কিছু উচ্ছিষ্ট আবর্জনার মুল উৎপাটনে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন। উপস্থিত শুধী জনের কবিতা শুনেছি।মাঝে মাহাবুব ভাই আর নন্দনীর ছোলা মুরির আপ্যায়ন মনে থাকবে অনেকদিন সিঙ্গাপুর,নোয়াখালী থেকে এসে সময় পেলেই প্রিয় মানুষদের আর্থিক বিনিময়হীন শুধু ভালোবাসার টানেই ফিরে যাই অনুশীলনের কবিতার ডায়াসে। কয়েক মিনিট থাকলেই হয়তো এক সাথে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি পরিবেশনা দেখা হতো।মিস করেছি প্রিয় এবিএম সোহেল রশিদ ভাইকে।

সর্বশেষ অনুশীলন সহসভাপতি শাহী সবুর এর কবিতার পরিবেশনা চলার সময়, সময়ের চিৎকার মোবাইলে।মাহাবুব ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফিরে আসি মগবাজার বাংলা মটর থেকে মগবাজার চৌরাস্তায়।রোগী তখন আমার অপেক্ষায়। ঘড়ির কাঁটায় ন’টা.প্রিয় বন্ধু লিটন,তার স্ত্রী মমি,কন্যা সয় অপেক্ষায় আদ্বীন হাসপাতালের রাস্তায়।

আমার লেখা বড়,তাও অভিযোগ।লিখেছি নিউরোসাইন্স হাসপাতালে ডাক্তারের ১০৪ নং কক্ষের সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে।স্ত্রী তখন ছটফট করছে মাথার যন্ত্রনায়।নিয়ম ভেঙ্গে ডাক্তার দেখবেন না।তিনি আছেন রাউন্ডে।রোগী বাড়ছেই।ডাক্তার ভেতরে একজন।লেখা শেষ সিরিয়াল বহুদুর।

আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।