সম্প্রতি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে ইরি-বোরো মৌসুমে রোপা ধান গাছে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিশেষ করে বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ জাতের ধানে এ রোগের প্রবণতা দেখা দিতে পারে। দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা, কুয়াশা, অতিবৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়ার কারণে নেক ব্লাস্ট ও লিফ ব্লাস্ট সৃষ্টি হতে পারে।

কৃষিবিদদের তথ্য মতে, এ রোগ দেখা দিলে করনীয়, যেসব জমির ধান নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়নি, অথচ উক্ত এলাকায় ব্লাস্ট রোগের অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে অথবা ইতোমধ্যেই কিছু স্পর্শকাতর আগাম জাতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাবে। সেখানে ধানের শিষ বের হওয়ার সাথে সাথে অথবা ফুল আসা পর্যায়ে ছত্রাকনাশক যেমন ট্রুপার (৫৪ গ্রাম/বিঘা) অথবা নেটিভো (৩৩ গ্রাম/বিঘা) শেষ বিকালে ৭-১০ দিন অন্তর দু’বার আগাম স্প্রে করতে হবে। ব্লাস্ট রোগের প্রাথমিক অবস্থায় জমিতে পানি ধরে রাখতে পারলে এ রোগের ব্যাপকতা অনেকাংশে হৃাস পায়।

এদিকে এ রোগ এড়াতে ব্যাপক তৎপর রয়েছে মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি বিভাগ। ব্লাস্ট রোগ এড়াতে ও এ রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে কৃষি অফিস। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন জানান, ধানের ব্লাস্ট রোগ এড়াতে করনীয় তথ্য সম্বলিত কৃষকের মাঝে ৫ হাজার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। মাঠ দিবস, উঠান বৈঠক, পথ সভা ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করা হচ্ছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করা হচ্ছে। মসজিদ ও অন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ঘোষনা দেয়া হচ্ছে। আমরা সবসময়ই কৃষকদের কাছ থেকে জমির খোঁজ খবর নিচ্ছি। আমাদের লোকজন মাঠে কাজ করছে।

এ রোগ দেখা দিলে করণীয় বিষয় তুলে ধরে কৃষি কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন জানান, এ রোগ দেখা দিলে প্রাথমিক অবস্থায় জমিতে ১-২ ইঞ্চি পানি ধরে রাখতে পারলে ব্যাপকতা অনেকাংশে হ্রাস পায়। পাতা ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলে বিঘা প্রতি অতিরিক্ত ৫ কেজি পাটাশ সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। ব্লাস্ট রোগের প্রাথমিক অবস্থায় প্রতি ৬ শতাংশ জমিতে ৮ গ্রাম ট্রুপার ৭৫ ডব্লিউপি/দিফা ৭৫ ডব্লিউপি, অথবা ৬ গ্রাম নেটিভো ৭৫ ডব্লিউজি, অথবা ট্রাইসাইক্লাজল/স্ট্রবিন গ্রুপের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় ১০ লিটার পানিতে ভালভাবে মিশিয়ে শেষ বিকালে ৫-৭ দিন অন্তত দু’বার প্রয়োগ করতে হবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ পাভেল খান পাপ্পু বলেন, চলমান সময়ে আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন এলাকায় ধানে ব্লাস্ট রোগ দেখা দিচ্ছে। এ রোগ আক্রান্ত পাতায় প্রথমে ছোট ছোট কালচে বাদামি দাগ দেখা যায়। আস্তে আস্তে দাগগুলো বড় হয়ে মাঝখানটা ধূসর বা সাদা ও কিনারা বাদামি রং ধারণ করে। দাগগুলো একটু লম্বাটে হয় এবং দেখতে অনেকটা চোখের মত। একাধিক দাগ মিশে গিয়ে শেষ পর্যন্ত পুরো পাতাটি শুকিয়ে মারা যেতে পারে। এভাবেই রোগ চেনা যাবে। এ রোগ এড়াতে আমরা সভা, সমাবেশ ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন করছি। তাছাড়া আমাদের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সবসময় মাঠে কৃষকদের সাথে কাজ করছেন।

আমাদের বাণী-/ঢাকা/এবি

[wpdevart_like_box profile_id=”https://web.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।