রমজান মাসেই আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। ১১তম গ্রেড প্রদানসহ কয়েকটি দাবিতে ফের আন্দোলনের নামতে তারা বিভিন্ন জেলায় ইতোমধ্যে যোগাযোগ শুরু করেছেন। রাজধানী ঢাকাতে এ কর্মসূচি পালন করবেন বলে সহকারী শিক্ষকরা জানিয়েছেন।

এদিকে শতভাগ পদোন্নতির দাবি বাস্তবায়নে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা। এজন্য আগামী ১মে রাজধানীর উত্তরায় জরুরি সভায় বসছেন তারা। সেখানে শতভাগ পদোন্নতির সিদ্ধান্তের পাশাপাশি চারটি ইস্যুতে তারা আলোচনা করবেন।

১১তম গ্রেড দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। সরকারও তাদের দাবি আদায়ে বিভিন্ন সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো সে ব্যাপারে তেমন অগ্রগতি হয়নি বলে তারা জানিয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা রমজানেই আন্দোলনে নামার ব্যাপারে প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘১১তম গ্রেড নিয়ে এখনো কোন অগ্রগতি নেই। এ কারণে রমজানের ছুটিতে রাজধানী ঢাকায় লাগাতার কর্মসূচি পালনের চেষ্টা চলছে। জেলা ও থানা পর্যায়ে শিক্ষকদের সঙ্গে ইতোমধ্যে ব্যাপক যোগাযোগ শুরু হয়েছে।’ তবে কি ধরণের কর্মসূচি পালন করবেন তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হবে বলেও জানান তিনি।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে সরাসরি পদোন্নতির না দিয়ে ৬৫ শতাংশ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষকরাও। এজন্য তারা শতভাগ পদোন্নতির দাবির বিষয়টি সরকারকে জানাতে চান। প্রাথমিকভাবে এটি জানানোর পর সরকার কোন সিদ্ধান্ত না জানালে পরবর্তীতে বড় কর্মসূচিতে যাবেন বলে তারা জানিয়েছেন।

প্রধান শিক্ষকদের একটি সূত্র জানিয়েছেন, আগামী ১ মে বুধবার সকাল ১০টায় সরকারি প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে এক জরুরি সভা আহবান করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকার উত্তরা ইউনাইটেড কলেজে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সকল প্রধান শিক্ষকদের উপস্থিত থাকার জন অনুরোধ জানিয়েছেন সমিতির নেতারা।

ওই সভায় শতভাগি পদোন্নতির বিষয়টি ছাড়াও চার প্রসঙ্গে আলোচনা হবে। সেগুলো হল- প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল; বেতন স্কেল দশম গ্রেড; চলতি দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের প্রসংঙ্গে এবং বিদ্যালয়ের সময় সূচীসহ নানা প্রসঙ্গ।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ বদরুল আলম বলেন, ‘পদোন্নতির ব্যাপারটি নিয়ে শিক্ষকরা অসন্তুষ্ট। এ ব্যাপারে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে প্রাথমিকভাবে শতভাগ পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানানো হবে।’

তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক দাবি জানানোর পর সরকার যদি সাড়া না দেয় সেক্ষেত্রে বৃহৎ কর্মসূচিতে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। সেক্ষেত্রে আমাদের পরবর্তী সভায় আলোচনা করে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

শিক্ষকদের সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রাথমিক শিখ্ষকদের জন্য কিছু সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে এসেছে। এছাড়া তাদের দাবিসহ কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। তবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সেগুলো বাস্তবায়িত হতে অহেতুক দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০তম গ্রেডে গেজেট করার জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ সৃষ্টির গেজেট যেকোন মূহুর্তে প্রকাশ হতে পারে। সেটি হলে তারা ১১তম গ্রেডে বেতন পাবেন। সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে পদোন্নতি দেওয়া হবে। সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেলও দুই ধাপ বৃদ্ধি করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

এর বাইরে বছরেই চলতি দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের স্থায়ীকরন করা হবে এবং এক হাজার ৭০০ শিক্ষক ও ৩০০ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে বিদেশে পাঠানো হবে। স্ব স্ব বিদ্যালয়ে প্রশ্নপত্র তৈরী ও মুদ্রণের নির্দেশনার পাশিাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে এক শিফটে চালানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

তারা আরও জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষকদের এটিইও পদে ধারাবাহিক বিভাগীয় পদোন্নতি দেওয়া হব। এরমধ্যে ৬০ শতাংশ প্রধান শিক্ষকদের মধ্য থেকে এবং বাকি ৪০ শতাংশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা হবে। এছাড়া চলতি বছর এক লাখ নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।

পাশাপাশি বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য স্লীপের অনুদান চল্লিশ হজার থেকে বাড়িয়ে এক লক্ষ ও প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন দৃষ্টিনন্দন, আকর্ষনীয় ও বহুতলা বিশিষ্ট করার পরিকল্পনা সরকার করছে বলেও তারা জানিয়েছেন।

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।