এসেছে নোয়াখালী সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে। বিষ খেয়েছে মেয়েটি। বয়স পনের ষোল হতে পারে।নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ইমারজেন্সি থেকে ওয়ার্ডে নিতেই যা করলো কর্মচারীরা।

সকাল ৮.৩০ থেকে ৯.১০ মিঃ পর্যন্ত কোন ডাক্তারের দেখা নেই। অথচ ইমারজেন্সীতে ওয়াশ করার কথা। বয় আয়াদের কথায় আগে টাকা দাও, মা বলছে,ভর্তির টাকাও নেই।প্রাইভেটে যেতে পারবেনা।বাঁচাও।মেয়েকে বাঁচাও।

তাদের কথায় আগে ভর্তি।  ইমারজেন্সী থেকে বের করে দিয়েছে জলদি। আমি দিলাম হুংকার। তেড়ে এলো ক’জন। আমাকেই ধরে ফেলে।
সবাই ওয়ার্ড বয় টাইপের। ক্লিনার ও আছে।

বললাম সবার ছবি তোলা আছে। আগে চিকিৎসা দাও। মারা গেলে এই ছবি কিন্তু সাক্ষী। কে শোনে কার কথা। মা কাঁদছে। কে আছো বাঁচাও আমার মাকে।

আবার রোগীর অবস্থা ও ভালোনা। তাই আর থাকা হলোনা। জানিনা মেয়েটা বাঁচবে কিনা। ভাইয়ের সাথে রাগ করে ঘরে রাখা কীটনাশক খেয়ে ফেলে মেয়েটি। ওয়ার্ড বয় আয়াদের কথা রোগীর মল মুত্র পরিস্কার করে কেন আনেনি।
বললাম আপনারা কি করিবেবন? কে করবে পরিস্কার, উত্তর রোগীর লোক,আচ্ছা,ঠিক আছে,পরিস্কার পরে, ভাই আগে রোগীর বিষ ক্লিন করেন।

সকাল ৯ টা ১০ মিঃ মহিলা টিকিট কাউন্টারে তখনো আসেননি টিকেট মাস্টার।বাংলাদেশে অনেক হাসপাতালে যাওয়া হয়।নোয়াখালী সদর হাসপাতালের গেট থেকে সিউয়ারেজের দুরগন্ধের শুরু।এখানেই ইন্টার্নি ডাক্তাররা ফার্মেসীর পাশের ক্যাফেটেরিয়ায় দাঁড়িয়ে সেরে নিচ্ছেন নাস্তা। এক দালাল জিজ্ঞেস করলো স্যার কি হেল্প করতে পারি।গেটের সামনে স্মার্ট রিপ্রেজেনটেটিভ অপেক্ষায় কখন তুলবেন প্রেসক্রিপশনের ছবি। রক্ত পরীক্ষাগারের মেয়েটা যদি হেল্প না করতো আরো কয়ঘন্টা অপেক্ষা লাগতো কে জানে?

বেরিয়ে আসলাম।হাতে তিনটি ব্যাগ,সাথে রোগী।রক্তশুন্যতায় দাঁড়াতে পারছেনা।

আমার গন্তব্য সেনবাগ।চোখে ভাসছে মেয়েটার ছবি,আর মায়ের আকুতি।কে আছো আমার মেয়েকে বাঁচাও।ক্লিনার রশির মাথায় পাট বাঁধা একগোছা সোনালী আঁশ এ দিক থেকে ও দিকে ছুড়ছে বলছে সর সর,তোরা সর।

 লেখক, কবি ও সাংবাদিক

আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।