হামলা পাল্টা হামলা এবং প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনে ক্রমশ:ই সহিংস হয়ে উঠছে পটুয়াখালীর সাতটি উপজেলা পরিষদের নির্বচনী মাঠ। তবে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রন রাখাসহ একটি সুষ্ঠ, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে রয়েছে নির্বাচন সংশ্লিস্ট প্রশাসন।

পটুয়াখালীর সদর, বাউফল, মির্জাগজ্ঞ, গলাচিপা, দশমিনা, দুমকী ও কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন চতুর্থ ধাপে ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাত উপজেলায় চেয়ারম্যান ২৮জন, ভাইস চেয়ারম্যান ২৫জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১৯জনসহ মোট ৭২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এ সাতটি উপজেলায় সাতজন নৌকার মাঝির বিপরীতে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন আওয়ামীলীগের ২০জন বিদ্র্ােহী প্রার্থী। বিদ্রোহীদের মধ্যে পাঁচজন প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান থাকায় শক্ত প্রতিদ্বন্দিতা তৈরি হয়েছে মাঠে। ফলে নির্বাচনী প্রচারনার শুরু থেকেই আওয়ামীলীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সমর্থকরা অনেকটাই দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রচারনার শুরু থেকেই আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আনা হয় নির্বাচনী আচরন বিধি লংঘনের অভিযোগ। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে জেলা প্রশাসন সকল প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক করে। বৈঠকে সুষ্ঠ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সকলকে নির্দেশনা দেয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২৯মার্চ) শেষ বিকেলে কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরের শেখ রাসেল সেতু সংলগ্ন এলাকায় প্রতিপক্ষের সমর্থকদের তিন দফা হামলায় আহত হয়েছে নৌকা প্রতীকের তিন সমর্থক। বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘটেছে ছোটখাট হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন, খুন জখমের হুমকি, সন্ত্রাসী ভাড়া করে জড়ো করা, কেন্দ্রে দাঙ্গা ও ভোট ডাকাতির চেষ্টাসহ সাইবার ক্রাইমের অভিযোগ এনে (২৭মার্চ) প্রতিপক্ষের বিরুদ্বে সাংবাদ সম্মেলন করেছেন নৌকার প্রার্থী রাকিবুল আহসান। একই দিন পাল্টা সাংবাদ সম্মেলনে রাকিবুলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনেন প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থী সৈয়দ আকাতারুজ্জামান কোক্কা। এদিকে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডের জন্য বর্তমান ও সাবেক দুই চেয়ারম্যান, দুই ইউপি সদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাত নেতা-কর্মীকে (২৯মার্চ) আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।

মির্জাগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়রম্যান প্রার্থী খান মো. আবু বকর সিদ্দিকী’র নির্বাচনী সমন্বয়কারী, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদ সোহেল আহম্মেদের বাসভবনে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে (২১মার্চ)। গলাচিপায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান লিকনের বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। অবশ্য (২৬মার্চ) আনুষ্ঠানিক ঘোষনার মাধ্যমে তিনি দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন। বাউফল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সহিংস সংঘর্ষের ঘটনায় (২৩মার্চ শনিবার) পাল্টাপাল্টি সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল মোতালেব হাওলাদার ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মজিবুর রহমান।

প্রার্থীদের অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগসহ হামলা ও পাল্টা হামলার এসব ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে সাধারন ভোটারসহ দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, পটুয়াখালীর সাতটি উপজেলার ৪৫৩টি ভোট কেন্দ্রের ভোট গ্রহনের সার্বিক প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি। আশা করছি সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠ, সুন্দর ও একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আমরা উপহার দিতে পারব। সকল ভোটারগন র্নিবিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।

পটুয়াখালীর সদর উপজেলায় ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৮৯টি ভোট কেন্দ্রের ৬১০টি ভোট কক্ষে ভোট গ্রহন হবে ইভিএম পদ্ধতিতে। ইভিএম পদ্ধতির প্রশিক্ষন কার্যক্রমের উদ্ভোধনে এসে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, একটি সুন্দর ও নিরেপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়ার জন্য আমরা নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।

আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।