পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলায় গর্ভের অবৈধ সন্তান গর্ভপাত করাতে গিয়ে নাছিমা খাতুন নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
মারা যাওয়া নারী সুজানগর উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের ক্রোড়দুলিয়া গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের মেয়ে এবং সে স্থানীয় কামারদুলিয়ায় অবস্থিত এইচএম এফ ইটভাটায় শ্রমিকদের রান্নার কাজ করত। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার রাতে উক্ত ইটভাটার মালিক মো.মুক্তার হোসেন ও ম্যানেজার সেলিম হোসেন কে পুলিশ আটক করেছে।
এদিকে মারা যাওয়া নাছিমা খাতুনের ভাই মো. রায়হান খান এ ঘটনায় মঙ্গলবার সুজানগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
থানায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায় স্বামী পরিত্যক্ত উক্ত নাছিমা খাতুন তার পিতার বাড়ি থেকে কামার দুলিয়ায় অবস্থিত তাঁতীবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মৃধা ও মুক্তার হোসেনের যৌথ মালিকানাধীন এইচএম এফ ইটভাটায় প্রায় এক বছর ধরে শ্রমিকদের রান্নাবান্নার কাজ করে আসছিল। এরই মধ্যে ০৩/১০/২০১৮ তারিখ হতে তাকে একজন বিয়ের প্রলোভন দিয়া দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করায় সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে।
পরে সে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার পেটে টিউমার হয়েছে বলে গোপনে ভাটার লোকজন সুজানগর হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে সুজানগর মন্ডল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে এসে ডাঃ সেলিম মোরশেদ এর কাছে চিকিৎসা গ্রহন করায় তাকে পরে বাড়ীতে নিয়ে আসার পর ঔষধ খেলে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হতে থাকে। তার এরপর ১৬-০৩-২০১৯ তারিখে তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীনকালে কর্তব্যরত ডাক্তার আল্টাসনোগ্রাম করতে বলে এরপর তার গর্ভে ৪ মাসের সন্তান রয়েছে এবং ঔষধ সেবনের ফলে বাচ্চা মারা গিয়ে পচন ধরেছে বলে জানায়। এ সময় তাকে দ্রত অপারেশন করে বাচ্চা বের করার পরামর্শ প্রদান করে ডাক্তার। এরই মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮-০৩-২০১৯ তারিখ সোমবার ভোর রাত সাড়ে ৫টার দিকে মারা যায় উক্ত নাছিমা খাতুন। এর পরপরই বাড়িতে নিয়ে এসে দ্রুত তার দাফনকাজ সমাপ্ত করা হয়।
এ বিষয়ে মারা যাওয়া মোছা.নাছিমা খাতুনের বোন রিনা খাতুন জানান প্রথমে টিউমার হয়েছে আমার বোনের পেটে বলা হলেও ইটভাটার সদ্দার গফফার ২৫ হাজার টাকা প্রদান করে দ্রুত আমার বোনের পেটের বাচ্চা নষ্ট করতে বলে। বর্তমানে উক্ত ইটভাটার সদ্দার গাফফার পলাতক রয়েছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট এধরণের ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাক তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন মারা যাওয়া নাছিমা খাতুনের পরিবারের সদস্যরা সহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
সুজানগর থানার ওসি (তদন্ত) অরবিন্দ জানান নাছিমার গর্ভের অবৈধ সন্তান গর্ভপাত করাতে গিয়েই তার মৃত্যু হয়েছে মর্মে তার ডেথ সার্টিফিকেটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছেন।
সুজানগর থানা অফিসার ইনচার্জ শরিফুল আলম জানান, মামলার ভিত্তিতে কোর্ট থেকে অনুমতি পাওয়ার পর নাছিমার মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে পাবনা সহকারী পুলিশ সুপার (সুজানগর সার্কেল) ফরহাদ হোসেন জানান এ ধরণের কাজের সাথে যারাই জড়িত থাক তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।এবং যারা পলাতক রয়েছে তাদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা
[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]