ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা;   স্ত্রী লায়লা আরজুমান্দ বানু লিলির মরদেহ সামনে নিয়ে অঝোরে কাঁদলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। জানাজার আগে দীর্ঘ সংসার জীবনে স্ত্রীর সহযোগিতা, ধর্ম পরায়ণতা, সততা আর দায়িত্বশীলতার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে স্ত্রীর শিক্ষকতা জীবনের স্মৃতিচারণও করেন উপস্থিত মুসল্লিদের কাছে।

  • সোমবার (২৯ জুন) যোহরের নামাজের পর গাজীপুর শহরের জয়দেবপুর দারুস সালাম গোবরস্থান জামে মসজিদ মাঠে অনুষ্ঠিত জানাজার পূর্বে স্ত্রীর জন্য সকলের দোয়া প্রার্থনা করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘একজন স্ত্রী ভালো না খারাপ, তা কেবল স্বামীই ভালো বলতে পারেন। শিশু বয়সে মহামারি কলেরায় আমি মাকে হারিয়েছি। আমার স্ত্রীর অন্তিম ইচ্ছা ছিল- কোনো মহামারিতে যেনো তার মৃত্যু হয়। তাহলে শহীদের মর্যাদা পাবে। তার ইচ্ছাই শেষ পর্যন্ত পূরণ হয়েছে। মহামারিতেই মৃত্যু হলো। নিশ্চয়ই সে শহীদের মর্যাদা লাভ করবে।’

‘সংসার ও আমার রাজনৈতিক জীবনে প্রতিষ্ঠার পেছনে তার অবদান অনেক’ এ কথা বলেই অঝোরে কাঁদেন মন্ত্রী।একমাত্র ছেলে এটি এম মাজহারুল হক তুষারের ইমামতিতে নামাজে জানাজা শেষে তাকে গাজীপুর শহরে অবস্থিত প্রধান গোরস্থানে সমাহিত করা হয় লায়লা আরজুমান্দ বানু লিলিকে।

  • জানাজায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ, গাজীপুর সিটি মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমতউল্লা খান, সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আলিম উদ্দীন বুদ্দিনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১৩ জুন মন্ত্রী এবং মন্ত্রীর স্ত্রী লিলি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসলেও স্ত্রীর অবস্থা অবনতির দিকে যেতে থাকে। সিএমএইচ-এ তার চিকিৎসা চলছিল। সোমবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

  • লায়লা আরজুমান্দ বানু গাজীপুরের ঐতিহ্যবাহী জয়দেবপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন। ১৯৪৯ সালের ৬ জানুয়ারি গাজীপুরে শেখ মোবারকের ঔরসে এবং লাল বানুর গর্ভে জন্ম গ্রহণ করেন লায়লা আরজুমান্দ বানু লিলি। ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর আ ক ম মোজাম্মেল হকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তিনি মৃত্যুর আগে স্বামী, ২ মেয়ে, এক ছেলে এবং ৬ জন নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এদিকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ ( ২৯ জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ১৭৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ১৪ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৪১ হাজার ৮০১। আজ নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৭  হাজার ৮৩৭ টি যা গতদিনে ছিল ১৮ হাজার ৯৯ টি । গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৩ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়েছেন মোট ৫৭ হাজার ৭৮০ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৪৫ জন। তার মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী।

আমাদের বাণী ডট কম/২৯ জুন ২০২০/পিপিএম

সৈয়দপুরের বিজ্ঞাপন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।