রানা প্লাজা ধসের ষষ্ঠবার্ষিকীতে ২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্মেন্টস শ্রমিক শোক দিবস পালন ,রানা প্লাজা ধসে মালিকসহ দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা ও কর্মস্থলে মৃত্যু হলে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণের দাবিতে  নারায়ণগঞ্জে সমাবেশ ও মিছিল করেছে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট।

শুক্রবার বিকাল চার টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ ও শহরে মিছিল করে এই শ্রমিক সংগঠনটি।

সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভয়াবহ রানা প্লাজা ধসের ষষ্ঠ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১১৩৬ জন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করে, নিখোঁজ হয়েছে ৩০০ জনের অধিক এবং আহত হয় ২৫০০ শ্রমিক। সারাকা, স্পেক্ট্রাম, কে.টি.এস, তাজরিন এরূপ অসংখ্য শ্রমিক হত্যাকা-ের ঘটনার বিচারহীনতার মতোই রানা প্লাজা হত্যাকা-ের জন্য যারা দায়ী এখন পর্যন্ত তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়নি। দায়িত্ব অবহেলার জন্য দায়ী অসাধু সরকারি কর্মকর্তা আর মুনাফালোভী মালিকদের বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি বলেই রানা প্লাজা হত্যাকা-ের পরও টেম্পাকো, মাল্টি ফ্যাবসের মত কর্মস্থলে শ্রমিকের জীবনহানীর মিছিল থামানো যায়নি।

২৪ এপ্রিল রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্মেন্টস শ্রমিক শোক দিবস পালনের দাবি শ্রমিক ফ্রন্টের
ছবি; আমাদের বাণী

তিনি বলেন, রানা প্লাজা ধসে সহ¯্রাধিক শ্রমিক নিহতের ঘটনার পরপরই কর্মস্থলে শ্রমিকের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণের হার কত হওয়া উচিত তার একটি প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছিল। সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট তার প্রস্তাবনায় সংশ্লিষ্ট ওখঙ ঈড়হাবহঃরড়হ ্ ঋধঃধষ ধপপরফবহঃ অপঃ -১৮৫৫ এর আলোকে খড়ংঃ ড়ভ ুবধৎ বধৎহরহম অনুযায়ী আজীবন আয়ের পরিমাণ হিসাব করে পরিবার প্রতি ৪৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করেছিল। পরবর্তীতে অধিকাংশ জাতীয় পর্যায়ের শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও মালিকের আবহেলায় মৃত্যুজনিত কারণে আজীবন আয়ের সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিধান করার দাবি উচ্চারিত হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশনায় গঠিত ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ কমিটি ও ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক পরিবার প্রতি ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন। লাখ লাখ শ্রমিকের যথার্থ ক্ষতিপূরণের দাবিকে উপেক্ষা করে কর্মস্থলে শ্রমিকের মৃত্যুতে মাত্র ২ লাখ টাকা এবং স্থায়ী পঙ্গু হলে মাত্র ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের বিধান রেখে সরকার গত বছর নির্বাচনী ডামাডোলের আড়ালে শ্রম আইন সংশোধন করেছে। আমরা অবিলম্বে শ্রম আইনের এই অগণতান্ত্রিক সংশোধোনি বাতিল করে কর্মস্থলে শ্রমিকের মৃত্যুতে আজীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিধান করার দাবি জানাই।

নেতৃবৃন্দ ২৪ এপ্রিলকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্মেন্টস শ্রমিক শোক দিবস ঘোষণা, রানা প্লাজা ভবন ধসে মালিকসহ দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তি, রানা প্লাজা ভবনের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে শ্রমিক কলোনী এবং নিহত শ্রমিকদের স্মরণে রানা প্লাজার স্থানে ও জুরাইন কবরস্থানে শহিদ বেদী নির্মাণের দাবি করেন।

গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে এছারাও বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম গোলক, সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম শরীফ, কাঁচপুর শাখার সভাপতি আমানউল্লাহ আমান, সিদ্দিরগঞ্জ থানার সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সোহাগ, বিসিক শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ সাঈদুর, রূপগঞ্জ শাখার সভাপতি সোহেল, গাবতলী-পুলিশ লাইন শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসনাত কবীর, নারায়ণগঞ্জ জেলার দপ্তর সম্পাদক কামাল পারভেজ মিঠু।

আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।