জিকরুল হক, উত্তরাঞ্চল সংবাদদাতা;  প্রচন্ড অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে উত্তরাঞ্চলে কোরবানীর পশুরহাট শুরু হয়েছে। হাটগুলোতে বিক্রেতার সমাগম থাকলেও ক্রেতার গত বছরের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিন্তু ক্রেতা বিক্রেতারা মাস্ক ছাড়াই হাটে আসছেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ন্যূনতম নিয়ম মানা হচ্ছে না। সরকারি নির্দেশনা পুরোপুরি উপেক্ষিত হচ্ছে। সরকারের ঘোষিত নিয়মমতে ক্রেতা ও বিক্রেতা এক পথে ঢুকবে বের হবে অন্য পথে।

প্রতিটি পশুর দূরত্ব থাকবে কমপক্ষে তিন ফুট। থাকবে ক্রেতা বিক্রেতার মুখে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লোভস। হাটের প্রবেশ পথে জীবাণুনাশক স্প্রে করে তবেই ক্রেতা বিক্রেতারা হাটে ঢুকবে। সাবান ও পানির ব্যবস্থা পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকবে। বাঁশের বেড়া দিয়ে পশুর পৃথকীকরণ নির্ধারণ করার জন্য নির্দেশনা রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গ্রাম্য পুলিশ ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন টহলে। ইজারাদার হাটের যাবতীয় সুরক্ষার বন্দোবস্ত করবেন। পশুর হাটে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা মনিটরিং করতে প্রতিটি হাটে তিন সদস্য বিশিষ্ট ভিজিলেন্স টিম কাজ করবে। এর মধ্যে পশু চিকিৎসক একজন, একজন সহকারী ও ডেইরী ফার্ম মালিক সমিতির একজন সদস্য থাকবেন।

করোনা বিস্তার রোধে পশুর হাটের প্রতিরোধ ব্যবস্থা দেখতে সরেজমিনে যাওয়া হয় রংপুরের তারাগঞ্জ, দিনাজপুরের কাহারোল, আমবাড়ী, যশাই ও নীলফামারীর টার্মিনাল হাট। কিন্তু কোন পশুর হাটেই স্বাস্থ্যবিধির কোন রকম প্রক্রিয়া নজরে পড়েনি।

কথা হয় তারাগঞ্জ হাটের ইজারাদার মোফাকুরুল ইসলামের সঙ্গে। তার কাছে হাটের অব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন সাধারণ মানুষকে মাস্ক পড়ার কথা বললে চেতে ওঠে এবং আমাদের ধমক দেয়। পশু কেনাবেচা ও ক্রেতা বিক্রেতার সুবিধার্থে সরকারি নিয়ম মানছেন না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন করোনার কারণে হাটে বেচাকেনা নেই। ইজারার আসল পুঁজি আসবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। বাড়তি টাকা খরচ করার মত সামর্থ্য নাই। এমন ধরনের কথা বলেন কাহারোল, আমবাড়ী, যশাই ও নীলফামারীর টার্মিনাল হাটের ইজারাদাররা। এমনকি কোন হাটেই পশু সম্পদ দপ্তরের কোন টিম নজরে আসেনি। তারাগঞ্জ হাটের ইজারাদার মোফাকুরুল ইসলামকে পশুসম্পদ দপ্তরের চিকিৎসক হাটে আছেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন তারা আছে। হাটের কোথায় আছে বলা হলে কোন সদুত্তোর দিতে পারেনি।

রংপুর বিভাগের ৮ জেলা ও ৫৮টি উপজেলায় ছোট বড় ১৬৭টি পশুরহাট এ বছর বসেছে। প্রতিটি হাট মনিটরিং করতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পশুসম্পদ দপ্তরকে। কিন্তু তারা পুরোপুরি দায়িত্ব অবহেলা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশিষ্টজনরা বলছেন হাটের এমন অব্যবস্থাপনায় করোনা ভাইরাস এবার নিভৃত পল্লীর মানুষদের আক্রান্ত করবে। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে পারে।

পশু হাটের অব্যবস্থাপনা বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. হাবিবুল হক সত্যতা নিশ্চিত করেন। এবং হাটের ক্রেতা বিক্রেতারা কোন স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বিষয়ে জানতে কথা বললে তিনি সাফ জানিয়ে দেন এসব বিষয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন দেখবে। তিনি আরো বলেন রংপুর বিভাগে পশুসম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে ১৬৭টি হাটে ১৬৭টি ভিজিলেন্স টিম পশুরহাট পশু বিষয়ে মনিটরিং করছে। (ছবি আছে)

আমাদের বাণী ডট কম/২৫ জুলাই ২০২০/পিপিএম

=সৈয়দপুরের বিজ্ঞাপন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।