ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা;   প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। শহর ও গ্রামের সকল শিক্ষার্থীদের সমান সুযোগ তৈরিতে ‘হ্যালো টিচার’ নামে নতুন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপস) তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই অ্যাপস ব্যবহার করে দেশের যে কোনো স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা পছন্দের শিক্ষক বাছাই করে তার কাছ থেকে শিক্ষার বিষয়ে পরামর্শ নিতে পারবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

  • জানা গেছে, অ্যাপসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাসায় বসে যেকোনো বিষয়ের শিক্ষক বাছাই করে পাঠ সম্পর্কে বুঝতে ও জানতে পারবে। টেলিভিশন ও রেডিওতে পাঠ প্রচারের উদ্যোগ নেয়ার পর মোবাইল অ্যাপস তৈরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আরও কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই অ্যাপস তৈরিসহ করোনাকালে প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।

মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, করোনাকালে মোবাইল ফোনের জুম অ্যাপস ব্যবহার করে সব প্রধান শিক্ষক সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের সাঙ্গে ভার্চুয়াল সভা করবেন। টেলিভিশনে ‘ঘরে বসে শিখি’ কার্যক্রমে আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী যেন যুক্ত হয় ও টেলিভিশনে ডিজিটাল ক্লাস যেন দেখে এ জন্য ফোনের মাধ্যমে অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষকরা যোগাযোগ করবেন। পাঠ প্রচারের সময়সূচি স্থানীয় মসজিদের মাইকের মাধ্যমে অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীদের জানিয়ে দিতে হবে।

  • করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার জন্য বিদ্যালয়ভিত্তিক শিক্ষকরা প্রশ্নপত্র তৈরি করে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে অথবা মুঠোফোনে শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিয়ে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করবেন এবং তা যাচাই করবেন। এ কাজটি সফলভাবে সম্পাদনের জন্যে ইউইও এবং এইউইওরা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে বাস্তবায়ন করবেন।

কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার আগেই প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ‘কিডস অ্যালাউন্স’ দেয়া হবে। বিধি অনুযায়ী উপজেলাভিত্তিক সঠিক মানের একই রংয়ের শার্ট, স্কাট, প্যান্ট, টাই, জুতা কেনার ব্যবস্থা করতে হবে। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ‘রিকভারি অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করে তা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠাবেন।

এ ছাড়া প্রত্যেক প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিজ বিদ্যালয়ের নামে ফেসবুক আইডি খুলতে হবে। শিক্ষকরা পাঠদান কার্যক্রম ভিডিও করে ওই ফেসবুক আইডিতে আপলোড দেবেন। এখন থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে ‘বাস্তবায়নে এলজিইডি’ না লিখে এর জায়গায় ‘বাস্তবায়নে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর’ লিখতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব ধরনের মেরামত ও স্লিপের কার্যাবলি মানসম্মতভাবে যথাসময়ে শেষ করে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে বিল ভাউচার দাখিল করতে হবে প্রধান শিক্ষকের।

  • অন্যদিকে এখন থেকে প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সাইনবোর্ডে বাংলায় বিদ্যালয়ের নাম লিখতে হবে। বিদ্যালয়ের নামের আগে ‘…..নং’ কথাটি ব্যবহার করা যাবে না। এ বিষয়ে গত সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক সংশ্নিষ্ট সবাইকে চিঠির মাধ্যমে নির্দেশ দেন।

অধিদফতর সূত্র জানায়, একেক স্থানে একেকভাবে বিদ্যালয়ের নাম লেখায় তা দৃষ্টিকটু এবং শিশুদের জন্য তা বোঝাও কঠিন। সম্প্রতি এক সভায় মাঠ পর্যায়ের সকলের কাছে এ বিষয়ে সহযোগিতা চান সচিব।

  • এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোযোগী রাখতে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। গুগল প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করে শিক্ষার্থীরা নতুন অ্যাপস ব্যবহার করতে পারবে। অভিভাবকরাও এই অ্যাপস ব্যবহার করতে পারবেন। এতে করে শহর ও গ্রামের শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগ পাবে।

আমাদের বাণী ডট কম/০১ জুলাই  ২০২০/পিপিএম

সৈয়দপুরের বিজ্ঞাপন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।