সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা;  ঈদ আনন্দ নেই সিরাজগঞ্জের বানবাসি মানুষদের। উজানের ঢলে যমুনার পানিতে ঘর-বাড়ী তলিয়ে যাওয়ায় তাদের আনন্দের সেই সুযোগটুকু থেকেও বঞ্চিত বন্যাকবলিতরা। এবারের ঈদ কাটবে খেয়ে না খেয়ে, নৌকায় অথবা বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে।

জুলাইয়ের শুরুতে যমুনা নদীতে দফায়-দফায় বন্যার পানি আশায় নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে এখনো পানিবন্দি রয়েছেন সোয়া লাখ পরিবারের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন বানভাসিরা। সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের।

বাঁধে আশ্রয় নেওয়ায় প্রাণে বাঁচলেও ভেসে গেছে জেলার জনপদের ঘর-বাড়ি, মৎস্য ও প্রাণি। বাঁচার তাগিদে এখন পানিতে ডুবে থাকা নিজ ঘর ছেড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে আশ্রয় নিতে হয়েছে তাদের। দেখা দিয়েছে খাদ্যাভাব। কেউ কেউ কোনোমতে নৌকায় জীবনযাপন করছেন। রাত পোহালেই যে ঈদ, সে কথা ভুলেও মনে পড়ছেনা তাদের।

এমনিতে করোনার কারণে দীর্ঘদিন কর্মহীন হয়ে ঘরবন্দি থেকে আয় উপার্জন ছিল না বললেই চলে। তার ওপর বন্যার পানিতে শেষ আশ্রয়টুকুও কেড়ে নেওয়ায় ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে নদী পাড়ের বানবাসি মানুষদের।

বাভাসি ছকিনা বলেন, ঘর-বাড়ী হারিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি, বেঁচে থাকার জন্য লগাই করছি। ঈদ উৎসব বর্তমানে আমাদের জন্য নয়।

সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের পাঁচঠাকুরী গ্রামের আমিনুল তালুকদার বলেন, ১ সপ্তাহ আগে বাদশা ছিলাম বর্তমানে সব হারিয়ে ফকির হয়েছি। বর্তমানে তিনবেলা খাবার জুটতেছে না, তাই ঈদ নেই কোন ভাবনাও নেই।

নৌকা থাকা জমিলা খাতুন বলেন, খোলা আকাশের নিচে রাত-দিন পার করছি। দুঃসময়ের মধ্যে বসবাস করছি আমাদের আবার ঈদ কিসের।

যমুনায় চলতি বন্যায় জেলার ৭টি উপজেলার ৬৪টি ইউনিয়নে নিম্নাঞ্চলের এক লাখ ১৮ হাজার পরিবারের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। তবে বন্যার পানি দ্রুত কমতে শুরু করেছে। বন্যার্তদের জন্য ৫৬৩.৫ মেট্রিক টন চাল, ৫৮৯০ প্যাকেট শুকনো খাবার ছাড়াও নগদ ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দের বেশিরভাগ বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানান ত্রান কর্মকর্তা আব্দুর রহিম।

আমাদের বাণী ডট কম/০১ আগস্ট ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।