এমপিওভুক্ত করার জন্য ৬ বছর ধরে কর্মরত কলেজের নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. হারুন শেখের কাছে দ্বিতীয় দফায় দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয়েছে। প্রথমবার দুই লাখ টাকা দেয়ার পর দ্বিতীয় দফায় দাবিকৃত আরও দুই লাখ টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন হারুন শেখ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, গভর্নিং বডির সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যরা স্থানীয় এক যুবকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার জন্য ওই পদের বিপরীতে অবৈধভাবে পুনরায় নিয়োগ ঘোষণা করেছেন।

উপায়অন্তুর না পেয়ে ২০১৩ সাল থেকে অদ্যবধি কলেজের ওই পদে বহাল থাকা হারুন শেখ বাদি হয়ে অধ্যক্ষ, সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট ৩০ জনকে বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালতের বিচারক দ্বিতীয় দফায় ঘো

ষিত অবৈধ নিয়োগের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। ঘটনাটি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহিমগঞ্জ এলাকার বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজের।শুক্রবার সকালে হারুন শেখ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, বিচারকের ঘোষিত দ্বিতীয় দফার অবৈধ নিয়োগের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও শোকজের নোটিশ গত ২২ মে বিবাদীরা হাতে পেয়েছেন। পরবর্তীতে ২৩ মে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আলাল হোসেন, গভর্নিং বডির সভাপতি সরদার খালেদ হোসেন স্বপন, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আগরপুর কলেজের অধ্যক্ষ এবায়দুল হক শাহীন, শিক্ষক প্রতিনিধি শংকর বাড়ৈ, মুন্নী আক্তার এবং বীরশ্রেষ্ঠের সহোদর মঞ্জুর রহমান বাচ্চু মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এক প্রার্থীকে দ্বিতীয় দফার ঘোষিত অবৈধ নিয়োগে পুর্নবহাল করার জন্য জরুরি বৈঠক করেছেন।

বীরশ্রেষ্ঠ’র নামের কলেজের নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর অসহায় হারুন শেখ তার বৈধ নিয়োগ বহাল রেখে এমপিওভুক্তি হয়ে সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

হারুন শেখ জানান, ২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর থেকে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজটি এমপিও ভুক্ত করা হয়। এরপূর্বে ২০১৩ সাল থেকে তিনি ওই কলেজের উপরোক্ত পদে কর্মরত রয়েছেন। ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর পরীক্ষার মাধ্যমে বৈধ নিয়োগ হিসেবে তিনি ওই পদে অফিস আদেশে স্থায়ী নিয়োগ লাভ করেন। শুরুতে তার (হারুন শেখ) কাছ থেকে উন্নয়ন কাজের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ দুই লাখ টাকা গ্রহণ করেন। ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী এমপিও ভুক্ত হওয়ার জন্য কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীদের নামের তালিকা সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরাবরে প্রেরণ করা হয়। ওই তালিকার ১৫ নম্বর ক্রমিকে তার (হারুন শেখ) নাম রয়েছে। কলেজটি এমপিও ভুক্ত হওয়ার পর বেতন উত্তোলনের জন্য তিনি (হারুন শেখ) ব্যাংকে হিসাব নাম্বার খোলার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে জানায় তার এমপিও ভুক্ত হয়নি।

হারুন শেখ আরো জানান, বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলাল হোসেন ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবায়দুল হক শাহীনের কাছে জানতে গেলে তারা গভর্নিং বডির সভাপতি সরদার খালেদ হোসেন স্বপনের কথা বলে তার কাছে আরো দুই লাখ টাকা দাবি করে। তাদের দাবিকৃত ঘুষের টাকা দিতে অস্বীকার করায় গত ১৮ মার্চ কলেজ কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে পত্রিকায় নিয়োগ ঘোষণা করেন। উপায়অন্তুর না পেয়ে হারুন শেখ বাদি হয়ে গত ২১ এপ্রিল মোকাম বাবুগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।