করতোয়া নদী দখল ও দূষণ মুক্ত করা এবং তিস্তা সহ ৫৪ টি অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বগুড়ার বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ বগুড়া জেলা শাখা।

শনিবার বেলা ১১:৩০ টায় করতোয়া নদীর উপর ফতেহ আলী ব্রীজের উপর এই মানববন্ধন ও  সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ বগুড়া জেলা বাসদের আহ্বায়ক অ্যাডঃ সাইফুল ইসলাম পল্টু। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ জেলা সদস্য সচিব, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলার আহ্বায়ক সাইফুজ্জামান টুটুল, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের জেলা আহ্বায়ক দিলরুবা নূরী, বাসদ জেলা সদস্য রাধা রানী বর্মন।

অ্যাড সাইফুল ইসলাম পল্টু বলেন, “করতোয়ার উজান থেকে পানির প্রবাহ নেই। দখল আর দূষণে এ নদী জর্জরিত, এবং মরে যাওয়ার উপক্রম। এ নদী এখন কথাও নালা, কোথাও ডোবায় রূপ নিয়েছে, কোথাওবা নদীর বুকে ধান চাষ করা হয়। কাটাখালী নদীতে বাঁধ এবং স্লুইস গেট বসানোর পর পুরোপুরি শুকিয়ে যায় বগুড়া অংশে করতোয়া নদীটি। আর অন্যদিকে চলে ব্যাপকহারে দখল, দূষণ। সাম্প্রতিক সময়ে দখল উচ্ছেদের নোটিশ দখলকারীদের কাছে গেলেও, দখলকারীরা নির্বিকার। অন্যদিকে পত্রিকায় খবর এসেছে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গিয়ে প্রশাসন বাঁধার সম্মুখীন হয়েছে। এই বার্তাটি খুবই বিপদজনক, ব্যক্তি, ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান রাষ্টের চেয়ে কি বেশি ক্ষমতাধর? আর কোন সামাজিক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করার প্রয়োজন হলে তার বিকল্প ব্যবস্থা প্রশাসনকেই করতে হবে। নদী বাঁচানো খুবই জরুরী কারণ নদী না বাঁচলে দেশ বাঁচে না। তাই সকলেরই নদী বাঁচানোর আন্দোলনে যুক্ত হওয়া জরুরি”।

সাইফুজ্জামান টুটুল বলেন, “ বাংলাদেশে একসময় ১২০০ নদ-নদীর অস্তিত্ব ছিল, কিন্তু ভারত হয়ে আসা ৫৪টি নদীতে ভারত এক তরফাভাবে বাঁধ দিয়ে, আন্তনদী সংযোগের মাধ্যমে পানি সরিয়ে নেয়ায় পদ্মা, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাতেই আজ পানি না থাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় ছোট বড় অনেক নদীর আজ আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। করতোয়াও আজ অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে”।

কৃষক নেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, “ কৃষি-কৃষকের সাথে নদীর সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে কৃষি দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখে। নদী ধংস মানে কৃষি ধংশ, কৃষি ধংস মানে দেশের অর্থনীতি ধংস, কাজেই নদীকে বাঁচানো আজ জরুরী হয়ে পড়েছে”।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আড়াই হাজার বছর আগে পুণ্ড্র সভ্যতা গড়ে উঠেছিল করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে, সেই করতোয়াকে আজ দখল ও দূষণ করতে করতে শুকিয়ে মারা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ শুধুমাত্র নামদেখানো উচ্ছেদ নয়, নদীটিকে বাঁচিয়ে তোলার জন্য প্রশাসনের নিকট সর্ব দিক থেকে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানায়, দখলকারি যত প্রভাবশালীই হোক না কেন তাদের উচ্ছেদ নিশ্চিত করে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনার দাবি জানায় এবং ভারতের কাছে নতজানু না হয়ে কঠোরভাবে তিস্তাসহ ৫৪ টি আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি জানায়। এবং সর্বস্তরের মানুষকে এই নদী রক্ষার আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান

আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।