বগুড়া সংবাদদাতা;  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বগুড়ার জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক হাবিবুর রহমান। করোনায় আক্রান্ত হবার পর তিনি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

  • ৯২ বছর বয়সী হাবিবুর রহমানের বাড়ি বগুড়া শহরের সূত্রাপুর ঈদগাহ লেনে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ এশা বগুড়ার শহরের ভাইপাগলার মাজার মসজিদে জানাজা হয়। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমিত সংখ্যক লোকজন নিয়ে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় ভাইপাগলার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

হাবিবুর রহমানের নিকটাত্মীয় বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সামির হোসেন বলেন, ‘অধ্যাপক হাবিবুর রহমান রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসর নেন। এরপর তিনি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন।’

  • সামির হোসেন আরও বলেন, ‘সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় কয়েক দিন আগে তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে তার মৃত্যু হয়।’

এদিকে, বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গতকাল এক ব্যক্তি মারা যান। পরে বগুড়ার টিএমএসএস মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষায় জানা যায় তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। বগুড়া শহরের নিশিন্দারা এলাকার ওই বাসিন্দা একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ছিলেন।

 স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী,  দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩০ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ৭১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৮২৮জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল৬০ হাজার ৩৯১ জনে। ৫০টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৬৪৫টি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ হাজার ৮৮টি। আক্রান্তের হার ২০.০৭ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬৪৩ জন এবং এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১২ হাজার ৮০৪ জন। সুস্থতার হার ২১.২০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১.৩৪ শতাংশ। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানানো হয়, পুরুষ ২৩ জন ও নারী সাতজন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ জন, সিলেট বিভাগের তিনজন, রাজশাহী বিভাগের দুইজন, বরিশাল বিভাগের একজন ও রংপুর বিভাগের একজন। বয়স বিশ্লেষণে জানা যায়, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৪১-৫০ সাতজন, ৫১-৬০ ১১ জন, ৬১-৭০ ছয়জন, ৭১-৮০ দুইজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ১৭ জন এবং বাড়িতে ১৩ জন।

আমাদের বাণী ডট কম/০৫ জুন ২০২০/সিসিপি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।