কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া গ্রামের অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী শাহী মসজিদ। এই মসজিদে প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাদের মান্নত নিয়ে ছুটে আসেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকের ধারণা এই মসজিদ এক রাতে নির্মিত হয়। এই মসজিদে কোন আশা করে মান্নত করলে সেই আশা-কামনা পুরণ হয়। তাই তারা বিভিন্ন পশু মান্নত করে থাকে। অনেকেই তাদের ছেলে মেয়েদের প্রথম মুখে ভাত দিতেও ছুটে আসেন।কেউ কেউ বিভিন্ন ধরণের পুশু পাখি মসজিদের স্থানে উন্মুক্ত ছেড়ে দেয়ার মান্নতও করে থাকেন। কিন্তু মসজিদে এসে সে আশা আর পুরণ হয় না! পুশ-পাখিটিকে যত্নে নিয়ে এসে মসজিদের কতিপয় ব্যক্তিদের কাছে দিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এ ছাড়া দানের নগদ অর্থও কমে আসেনা।

এদিকে প্রতি শুক্রবার এই মসজিদে যেখানে হাজার হাজার টাকা আয় হয়। মসজিদটি এখন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আন্ডারে। এই মসজিদটি ১১/০৭/২০১৫ তারিখে কুষ্টিয়ার এমপি মহোদয় ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেয়। এই কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য বক্তিয়ার হোসাইন ও এজাজুর রহমান চৌধুরী ওরফে শাহীন চৌধুরী কে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

ইতিপূর্বে এই মসজিদের টাকায় একটি মাদ্রাসা চলত। এখন এই মসজিদে বিভিন্ন খ্যাত থেকে আসা টাকা হরিলুট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতি মধ্যে একটি প্রভাবশালী পক্ষ লুটপাট করতে না পারায় কৌশলে মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়েছে ।

এখন বিভিন্ন সন্ত্রাসীরা মসজিদকে নিয়ন্ত্রণ করছে বলে স্থানীয়দের অনেকেই অভিযোগ করেছে। ওই সন্ত্রাসীরা মুরগি, ছাগল বিক্রয়ের টাকা ও নগদ টাকা নিয়ন্ত্রণ করে পরে ভাগবাটোয়ারা করে চলেছে ।

অভিযোগ উঠেছে এলাকাবাসী সেখানে থাকতে না পারলেও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা সেখানে অবস্থান নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে। ইতিপূর্বে এই মসজিদকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ঘটনাও ঘটছে। এদিকে মসজিদের সব উন্নয়নের কাজ প্রত্বতত্ব বিভাগ করে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন খাত দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা উধাও করে দিচ্ছে কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এমন অভিযোগ এখন এলাকায় চাউর হয়েছে ।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ঝাউদিয়া শাখায় এই মসজিদের একটি একাউন্ট রয়েছে যার নং ১০০০২২৭৭৪। এই হিসাবের ২ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ২ মে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মোট জমা দেখানো হয়েছে ১৬৫,২৬৩ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে ১৬২,২১৯ টাকা। বর্তমান ব্যালেন্স ৩০৪৪ টাকা মাত্র ।

এদিকে কুষ্টিয়া ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ রতন শেখ জানান, এখন রোজার কারণে লোক কম হচ্ছে তবুও আজ (শুক্রবার) আমি সব খরচ বাদ দিয়ে ৯হাজার টাকা ব্যালেন্স রেখে এসেছি। গত শুক্রবার ১২ হাজার টাকা ব্যালেন্স রেখে এসেছিলাম।

স্থানীয়রা জানান, আজ ৩টি ছাগল নিলামে বিক্রয় হয়েছে ১০হাজার ১শ টাকা। মুরগির ছিল প্রয় ২০টি মতন এবং নগদ টাকাও উঠেছিল। তাদের অভিযোগ মসজিদ কমিটির সদস্যরা গরিবের প্রাপ্য টাকা মেরে খাচ্ছে। তাদের দাবি মসজিদের টাকায় আবার ঝাউদিয়া মাদ্রাসা চালু করা হোক।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।