চলতি বছর কুষ্টিয়ায় রেকর্ড পরিমাণ মামলা নিস্পত্তি করেছেন আদালত। দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কুষ্টিয়ায় পুলিশ, আদালত ও সরকারি প্রসিকিউশন নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করছে। যার ফলে ২০১৮ সালের তুলনায় চলতি বছর মামলা দায়েরের তুলনায় নিষ্পত্তি অনেক বেড়েছে।

চলতি বছর ১৬ হাজার ৯৭টি মামলা দায়ের হলেও ১৭ হাজার ৮৮৬টি মামলা নিষ্পত্তি করেছে কুষ্টিয়া জেলা দায়রা জজ ও জুডিশিয়ালসহ সব আদালত। মামলা দায়ের অপেক্ষা ১ হাজার ৭৮৯টি মামলা বেশি নিষ্পত্তি করেছে আদালত, যা অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় রেকর্ড।

গত তিন বছরে মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে ৭২ হাজার ৭৭৫টি। প্রতিটি মামলা যথাসময়ে শেষ করতে সাক্ষী উপস্থিতি বাড়াতে কাজ করছে স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত লিগ্যাল এইডের সদস্যরা।

চলতি বছর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন কুষ্টিয়া সফরে এসে মামলা নিষ্পত্তি ও সাক্ষী উপস্থিতি বাড়ায় পুলিশ, বিচারক ও প্রসিকিউশনের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ দেন। দেশের যে কোন জেলার চেয়ে কুষ্টিয়ায় মামলা নিষ্পত্তি ও সাক্ষী উপস্থিতি বেশি বলে জানান তিনি।

আইআরএসওপি প্রকল্পের জেলা প্রকল্প কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট শ্রাবন্তী মুখার্জী বলেন, মামলা নিষ্পত্তি যাতে দ্রুত হয় সেজন্য বিশেষ করে সাক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সদস্যরা বিভিন্ন সংস্থার সাথে কাজ করছে। পুলিশের সাক্ষী হলে পুলিশের সাথে যোগাযোগ, চিকিৎসক হলে সিভিল সার্জনের সাথে যোগাযোগসহ পাবলিক সাক্ষী হাজির করতে তাদের সাথে আমরা যোগযোগ করি।

২০১৮ সালের তুলনায় চলতি বছর মামলায় সাক্ষীর উপস্থিতি ৩৮ ভাগ থেকে বেড়ে ৮৭ ভাগে দাঁড়িয়েছে। গত বছর ১৪ হাজারে ৮১৩ জন সাক্ষী উপস্থিত হলেও এ বছর ২২ হাজার ৮১ জন সাক্ষী উপস্থিত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আদালত থেকেও সাক্ষী হাজিরায় সমন এমনকি ওয়ারেন্ট পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে।

পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, আমি যোগদান করার পর প্রথমেই কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছি। যার মধ্যে ঘটনা ঘটার পরপর তদন্ত করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চার্জশিট দাখিল। আর পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি বাইরের যেসব সাধারণ সাক্ষী থাকে তাদের উপস্থিতি শতভাগ বাড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছি। যার কারণে গত এক বছর সাক্ষী উপস্থিতি আগের বছরের তুলনায় অনেক বড়েছে।

তিনি বলেন, সবথেকে বেশি মামলার রায়ও হয়েছে এ বছর। আগামীতে শতভাগ সাক্ষী উপস্থিত যাতে হয়, সে ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হবে।

কুষ্টিয়া জজকোর্টের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, মামলায় ন্যায়বিচারের জন্য পুলিশের ভূমিকা বড় থাকে। মামলার রহস্য উদঘাটন, যথাসময়ে চার্জশিট প্রদান তাদের দায়িত্ব। এরপর বিচারক বিচার কাজ শুরু করেন। সেখানে সরকারি প্রসিকিউশনের ভূমিকা রাখতে হয়। তাই তিনটি প্রতিষ্ঠান যখন একসাথে সমন্বয় করে কাজ করে তখন কাজে গতি আসে। এসব কারণে চলতি বছর প্রচুর মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, সাক্ষী উপস্থিতি দেশের মধ্যে সেরা। আগামীতে জেলার মানুষকে শতভাগ আইনি সেবা দিতে আমরা প্রস্তত।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।