হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া জেলা সংবাদদাতা; জেলায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে গত দুই মাসে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন নারী ও ৯ জন পুরুষ। অন্যদিকে আজ শুক্রবার ১ জনসহ জেলায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৩ জনে। এর মধ্যে জেলা প্রশাসক ও পুলিশের ২২ সদস্য রয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় মারা গেছেন ১ জন।

  • উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১ জন, কুমারখালীতে ৩, ভেড়ামারায় ৩, দৌলতপুরে ২ ও মিরপুর উপজেলায় ২ জন রয়েছেন। 

জানা যায়, জেলায় সর্বপ্রথম করোনা উপসর্গ নিয়ে গত ৩০ মার্চ সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান শহরের চৌড়হাস এলাকার এক ইজিবাইক চালক। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওই দিন দুপুরে ভেড়ামারার ফারাকপুর গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মৃত ওই ব্যক্তির গ্রামের বাড়ি ভেড়ামারা পৌরসভার নওদাপাড়া এলাকায়। গত ০২ এপ্রিল শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে সালেহীন (৩৪) নামে নৌ-বাহিনীর এক সদস্যের মৃত্যু হয়। সালেহীন খুলনা নৌ-ইয়ার্ডে কর্মরত ছিলেন।

  • ১০ এপ্রিল বিকেল ৩টায় নিজ বাড়িতে জ্বর-শর্দি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মৃত্তিকাপাড়ার আশরাফুল ইসলাম (৪৫)। এরপর ১২ এপ্রিল করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি থাকা ময়না খাতুন (৪৩) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। ১৫ এপ্রিল জ্বর-বোমি ও করোনা উপসর্গ নিয়ে দৌলতপুর উপজেলার শাওন (০৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়।  কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ১৯ এপ্রিল সকালে করোনা উপসর্গ নিয়ে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। সর্বশেষ ২৯ মে সকাল ৮টার দিকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর গোরস্থান পাড়ায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৬৫ বছর বয়সী এক অবসরপ্রাপ্ত নার্সের মৃত্যু হয়। তিনি ঢাকায় থাকতেন।

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা. এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক বিবেচনায় নেয়া হয় না। তারপরও কেবলমাত্র স্থানীয়ভাবে এসব সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার কারণে তারা মৃত ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে থাকেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিদের বিষয়ে তাদের কাছে তেমন কোনো তথ্য নেই বলেও তিনি জানান।

  • এদিকে জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একশ এক বছর বয়সী বৃদ্ধ কুমারখালী উপজেলার শেরকান্দি এলাকার মোকাদ্দেস হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা এটিই প্রথম। মঙ্গলবার করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এক দিন পর বুধবার পরীক্ষার রিপোর্টে তার করোনা পজিটিভ আসে।

সিভিল সার্জন জানান, গত ২২ এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই করোনা শনাক্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

এদিকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (১২  জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ হাজার ৯৫০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৯৯০টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো চার লাখ ৭৩ হাজার ৩২২টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৪৭১ জনের মধ্যে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৮১ হাজার ৫২৩ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৬ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ৯৫ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫০২ জন। ফলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মোট ১৭ হাজার ২৫০ জন।

আমাদের বাণী ডট কম/১২ জুন ২০২০/ডিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।