গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা; ফের বাড়তে শুরু করেছে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। দীর্ঘ এক মাসের বন্যার ধকল কাটতে না কাটতে আবার বন্যার আশঙ্কা। চতুর্থবারের মতো বন্যার কবলে পড়ছে গাইবান্ধার চরাঞ্চলের মানুষ। স্রোতে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি, গবাদি পশু। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে অনেক এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা। বন্যার পর সপ্তাহ না পেরোতেই ফের পানিবন্দী লাখো মানুষ। দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রায় সব নদ-নদীর পানি।

জানা গেছে, গাইবান্ধার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমার পরে আবার বৃদ্ধির ফলে প্লাবিত হচ্ছে গাইবান্ধা সদরের কয়েকটি, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার বেশিরভাগ ইউনিয়ন। এছাড়াও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদী বেষ্টিত কয়েকটি ইউনিয়নে আবার বন্যার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জেলার ৫ উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ নতুন করে বন্যা কবলিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।

আজ রবিবার (০২ আগস্ট ২০২০) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান জানান, জেলার প্রায় সব নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ঘাঘট নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, তিস্তা নদীর পানি অপরিবর্তিত থাকলেও করতোয়া নদীর পানি ৪৮ ঘণ্টায় ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ।

গত মাসের প্রথম সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ও ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় । ফলে গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা, সুন্দরগঞ্জ ও ফুলছড়ি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের ৫০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। গত ৬ জুলাই বন্যার পানি বিপৎসীমার নিচে নামার তিনদিনের মাথায় আবার বন্যা দেখা দেয়।

২য় সপ্তাহে ফের ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়।

১০ দিন পরে পানি কমতে শুরু করে আবার জুলাই মাসের ৩য় সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। করতোয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এক সপ্তাহ পানি কমার পরে আবারও আগস্টে প্রথম দিন থেকে পানি বাড়তে শুরু করেছে।

আমাদের বাণী ডট কম/০২ আগস্ট ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।