শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট সংবাদদাতাঃ দেশের অন্যতম ব্যস্ততম মহাসড়ক খুলনা -রামপালও মোংলা। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির কিছু অংশ যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

এই মহাসড়কটির বাগেরহাট জেলার বেশ কিছু অংশে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই সড়কের ওইসব অংশে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বাগেরহাটের রামপাল-মোংলা বন্দর ও শিল্পাঞ্চলের ভিতর দিয়ে যাওয়া খুলনা- রামপালওমোংলা মহাসড়কটি সংস্কারের ৫ বছর যেতে না যেতেই ৮ কিলোমিটার সড়কের বেহালদশা। শুকনা মৌশুমে প্রচন্ড ধুলাবালী আবার বর্ষায় হাটু কাঁদা-পানি ও খানাখন্দ। প্রায় তিন বছর ধরে দুর্ঘটনার ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন, চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় পথচারীদদের। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্দরের বহুমুখী পরিকল্পনার মধ্য এ সড়কটি ৬ লেনে প্রশস্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে জাতীয় এ সড়ক সংলগ্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো সচেতন না হলে এ সড়কটি সচল রাখা কষ্টকর বলে অভিযোগ বন্দর কর্তৃপক্ষের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোংলা-রামপাল-খুলনা ৪৫কিলোমটিার মহাসড়কের বন্দর এলাকা থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটারই ভাঙ্গা ও খানাখন্দে ভরা। মোংলা বন্দর থেকে শুরু হওয়া গুরুত্বপুর্ন এ সড়কটি ঢাকা, চট্ট্রগ্রাম, নারায়গঞ্জসহ দেশের দক্ষিনাঞ্চলের সকল বিভাগ ও জেলা শহরের সাথে যোগাযোগ বহন করে এটি। তাই এখান থেকে দুরপাল্লার বাস দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে ও আসছে। এছাড়া, বন্দর ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যাবসায়ীক মালামাল পরিবহন করা হয় এ সড়ক দিয়ে। প্রচন্ড ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন মালামাল বোঝাই করে চলাচল করতে হচ্ছে পরিবহন চালকদের। জাতীয় এ সড়কটির বন্দর এরিয়ায় প্রায় শতাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান থাকায় দু’পাশে মালামাল বহনকারী লড়ি-ট্রাকসহ যানবাহন রাখার কারনে মানুষ চলাচল করতে পারছেনা।

সর্ব শেষ ২০১৩ সালের শেষের দিকে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যায় এ সড়কটি বন্দর এরিয়ায় সংস্কার করা হয়। কিন্ত ৫ বছর যেতে না যেতেই আবার ভেঙ্গে যায় সড়কটি। মোংলার বন্দর থেকে দিগরাজ ও বেলী ব্রিজ পর্যন্ত এই ৮ কিলোমিটার রাস্তার অধিকাংশ এলাকা ভাঁংঙ্গাচোরা আর গর্তে ভরা। কোনো কোনো স্থানে ডেবে উঁচু-নিচু হয়ে আছে। একটু বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে কাদা হয়ে যায়। প্রতি বছর মোটা অংকের টাকা খরচ করে সামান্য সংস্কার করলেও তা কোন কাজে আসছে না। একদিকে মোংলা বন্দরের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে শত শত ভারী যানবাহন চলাচল করছে। অন্যদিকে, শিল্প প্রতিষ্ঠানের ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে যানবাহন চলাচল করার কারনেই এই সড়কটি সংস্কারের পরেও টিকছে না বলে দাবি বন্দর, সড়ক ও জনপথ বিভাগের। তাই এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করতে একটি প্রস্তাবনা পাশ করা হয়েছে যা অল্পদিনের মধ্যেই কাজ শুরু করা হবে বলে জানালেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টরা।

বেতাগাবাজারের কাঠ ব্যাবসায়ী ইসমাইল খান জানায়, ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত বড় বড় যানবাহন চলাচল করার কারনেই সড়কটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তার মধ্যে পমানি জমে বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দের সৃস্টি হয়। এছাড়া রাস্তার ছদু’পাবেশ শত শত ট্রাক পার্কিং করে রাখার ফলে পথচারীদের চলাচলে পরতে হচ্ছে সমস্যায়, ঝুকির মধ্যে পন্য নিয়ে বন্দর ব্যাবহারকারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে, প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘনা ও প্রান হানির ঘটনা, নষ্ট হচ্ছে চলাচলকারী যানবাহন।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক প্রশাসন (উপসচিব) মোঃ গিয়াস উদ্দিন বলেন, মোংলা-খুলনা সড়কটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। এই সড়কের দ্বিগরাজ ও বেলাই ব্রিজ পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশী। আর বেশীরভাগ সমস্যা হচ্ছে শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য। সড়কের এই এলাকা নিচু হওয়ায় এবং দুই লেনের এই রাস্তা দিয়ে শিল্প এলাকার ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই ভারী যানবাহন চলাচল করায় এই মহাসড়কের প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকা প্রতি নিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং দিনদিন তা বেড়েই যাচ্ছে। তবে এ সড়কটি ৬ লেনে প্রশস্ত করার জন্য একটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ, যার কাজ শুরু হলে জাতীয় এ সড়কটির আর কোন সমস্যা থাকবেনা বলে জানায় বন্দরের এ কর্মকর্তা

 

 

আমাদের বাণী ডট কম/২১ জুলাই ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।