আশরাফুল ইসলাম, গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা;  ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি এখন বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শনিবার রাতে বাঙালী নদীর বোচাদহ গ্রামে বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

ফলে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ, রাখালবুরুজ ও কোচাশহর ইউনিয়নের বোচাদহ, বালুয়া, ছয়ঘরিয়া,শ্রীপতিপুর, কুমিড়াডাঙা, পুনতাইর, পাছপাড়া, গোপালপুর, জিরাই, সোনাইডাঙ্গা, হরিনাথপুর-বিশপুকুর, কাজিরচক, পচারিয়া, মাদারদহ, কাজিপাড়া, ফরিকরপাড়া, পানিয়াসহ ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশংকা রয়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসিনতায় দেরীতে কাজ শুরু করায় এ বাঁধটি ভেঙে গেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। অপরদিকে গাইবান্ধা জেলা শহর সংলগ্ন কুপতলা, খোলাহাটি, ঘাগোয়া, গিদারী ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকায় বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ফলে ওইসব ইউনিয়নগুলোর বসতবাড়ি এবং সড়কগুলোতে এখন হাটু পানিতে নিমজ্জিত। এছাড়া গাইবান্ধা পৌরসভার অনেক নিচু এলাকাগুলোতেও পানি উঠে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।

এবিষয়ে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, উলেখিত উপজেলাগুলোতে ৩ হাজার ২৪৬ হেক্টর জমির আমন রোপা, পাট, আউশ ধান ও শাক সবজি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে উক্ত এলাকার মানুষ চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। সরকারি ত্রাণ তৎপরতার তুলনায় একেবারে কম হওয়ায় সংশিষ্ট পরিবারগুলো নিদারণ কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি, গোবিন্দগঞ্জ, সাদুল্যাপুর ও সদরসহ ৬ উপজেলায় ৩৮টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। মোট ১ লাখ ৪৮ হাজার ১৩৮ ব্যক্তি এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৫৫০ মে. টন চাল এবং ৫ হাজার ৬৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্রের পানি একই নেভেলে থেকে বিপদসীমার ৯১ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি এসময় ২ সে.মি. কমে বিপদসীমার ৭২ সে.মি. এবং করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ১৬ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আমাদের বাণী ডট কম/২৭ জুলাই ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।