ভারতে এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ সফরে গেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে শুরু হয়েছে টাইগারদের মিশন। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ রান এসেছে মুশফিকের ব্যাটে। ১৯.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ১৫৪ রান।

২০০৫ সালে ক্রিকেটের ক্ষুদ্র এই সংস্করণ চালুর পর বাংলাদেশ-ভারতের ম্যাচটি স্থান করে নিচ্ছে টি-টোয়েন্টির ১০০০তম ম্যাচ হিসেবে। টি-টোয়েন্টির হাজারতম ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ভারত সংগ্রহ করে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৪৮ রান। জবাবে ৩ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে টাইগাররা।

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমেই মাহমুদউল্লাহ বল তুলে দেন শফিউলের হাতে। প্রথম ওভারেই শফিউলের হাত ধরে আসে বাংলাদেশের সাফল্য। দলীয় ১০ রানে নিজের ষষ্ঠ বলেই রোহিতকে এলবির ফাঁদে ফেলেন শফিউল। রিভিও নিয়েই লাভ হয়নি। ৯ রানেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে ভারত অধিনায়ককে।

পাওয়ার প্লে শেষ হতেই আক্রমণে এলেন আমিনুল ইসলাম। তরুণ লেগ স্পিনার সাফল্য পেলেন নিজের প্রথম ওভারেই। ফেরালেন লোকেশ রাহুলকে। বিপ্লবের ঘূর্ণিতে শট খেলতে চেয়েও খেললেন না। কভারে মাহমুদউল্লাহ সহজ ক্যাচ নিয়ে বিপ্লবকে উইকেটের স্বাদ দিলেন। ১৭ বলে ১৫ রান করে সাজঘরে ফিরলেন রাহুল। তার আউটের সময় ভারতের রান ২ উইকেটে ৩৬। ইনিংসের ১১তম ওভারে শ্রেয়াস আইয়ারকে (২২) নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন বিপ্লব।

দারুণ বোলিং করতে থাকা আফিফ হোসেন পেলেন প্রথম সাফল্য। ফিরিয়ে দিলেন অভিষিক্ত শিবম দুবেকে। এর আগে ডেঞ্জারম্যান ধাওয়ান ফিরেছে রান আউটে। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ বলে ৪১ রান করে ফিরলেন ধাওয়ান।

ইনিংসের ১৬তম ওভারের শেষ বলে ভারতের হয়ে অভিষিক্ত শিভম দুবেকে (১) দারুণ এক ক্যাচে প্যাভিলিয়নে ফেরান আফিফ হোসেন ধ্রুব। ইনিংসের ১৯তম ওভারের ২য় বলে শফিউলের বলে ডিপ মিড লেগে নাইম শেখের তালুবন্দী হন রিশব পন্ত (২৬)।

বাংলাদেশের হয়ে শফিউল ইসলাম ৪ ওভারে ৩৬ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি। মোস্তাফিজ ২ ওভারে ১৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। ৩ ওভারে আমিনুল ২২ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। সৌম্য সরকার ২ ওভারে ১৬, মোসাদ্দেক ১ ওভারে ৮, মাহমুদউল্লাহ ১ ওভারে ১০ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। আল আমিন ৪ ওভারে ২৭ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি। আফিফ হোসেন ৩ ওভারে ১১ রান দিয়ে পান একটি উইকেট।

১৪৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরলেন লিটন দাস। দীপক চাহারের করা ওভারের পঞ্চম বলে কাভার পয়েন্টে রাহুলের হাতে ক্যাচ হয়েছেন তিনি। ফেরার আগে লিটন করেছেন ৪ বলে ৭ রান। এরপর জুটি গড়েন সৌম্য সরকার এবং মোহাম্মদ নাঈম। দ্বিতীয় জুটিতে তারা যোগ করেন ৪৬ রান। ব্যক্তিগত ২৬ রান করে বিদায় নেন নাঈম। যুভেন্দ্র চাহালের বলে বিগ শটে শিখর ধাওয়ানের হাতে ধরা পড়েন ২৮ বলে দুই চার আর একটি ছক্কা হাঁকানো এই অভিষিক্ত। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬০ রান যোগ করেন সৌম্য সরকার এবং মুশফিকুর রহিম। ব্যক্তিগত ৩৯ রানে বিদায় নেন সৌম্য। খলিল আহমেদের বলে বোল্ড হওয়ার আগে সৌম্য ৩৫ বলে এক চার আর দুই ছক্কায় তার ইনিংসটি সাজান। ১৭তম ওভারে দলীয় ১১৪ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

শেষ পর্যন্ত মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে ৩ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌছায় বাংলাদেশ।

ভারতের বিপক্ষে ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র ৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এই ৯ ম্যাচের মধ্যে আজকের জয়টিই বাংলাদেশের প্রথম জয়।

বাংলাদেশ একাদশ:

লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাইম শেখ, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শফিউল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন এবং আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।