ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে কয়েকটি গ্রামের প্রায় সবারই পেশা মুড়ি ভাজা। কথা বলারও নেই ফুরসত। রোজার মাসে মুড়ির চাহিদাকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছে গ্রামের নারী-পুরুষ এমনকি শিশুরাও। মুড়ির গ্রাম খ্যাত ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের দৌলতপুর ,কাতিহার , বাশঁগাড়া ও বেগুনগাঁও গ্রামের প্রতিটি ঘরেই এখন এই দৃশ্য। এখানাকার প্রায় সব বাড়িতেই এখন মুড়ি ভাজার ধুম। ‘গীগজ’ ধানের মুড়ি। যার খ্যাতি সর্বত্র।

রমজান মাস এলেই হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা বেড়ে যায়। অর্ধ শতাব্দীকালেরও অধিক সময় ধরে মুড়ি ভেজে জীবন ধারণ করে আসছে পীরগঞ্জের এই কয়েকটি গ্রামের ৩ শতাধিক পরিবার। আগে এর সংখ্যা আরো বেশি থাকলেও নানা সীমাবদ্ধতায় পেশা ছেড়ে দিয়েছে অনেকে। এ বছর মুড়িকে আকর্ষণীয় ও আকারে বড় করতে ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করছেন ক্ষতিকারক হাইড্রোস। আর এই অসাধু ব্যবসায়েিদর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকতে পারছে না পীরগঞ্জের মুড়ির গ্রাম কাতিহার, বেগুনগাঁও ২ শতাধিক নারী ব্যবসায়ী। অন্য সময়ের তুলনায় রমজান মাসেই মুড়ির চাহিদা কয়েক গুন বেড়ে যায়। তাই এসব এলাকার নারীরা মুড়ি বেচাকিনা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ভোরে মুড়ি ভাজার কাজ শেষ করেই পায়ে হেঁটে মাথায় মুড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন এ গ্রাম ও গ্রাম আর কেউবা শহরে।

নারায়নপুর দুর্গাপুর গ্রামের মুড়ি ব্যবসায়ী গীতা রাণী বলেন, রমজানে মুড়ির চাহিদা অনেক। কিন্তু পুঁজির অভাবে ঠিকমতো মুড়ি সরবরাহ করতে পারছি না। ফুলমতি রানী জানান, ভোর থেকে মুজি ভাজি, সকাল সাড়ে ছয়টায় বাড়ি থেকে বের হই। শহরের বিভিন্ন পাড়া ও মহল্লায় মুড়ি বিক্রি করি।

দৌলতপুরের সবিতা রাণী জানায়,দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মড়ি ভাজার কাজ করি মুড়ির চাল কিনে বাড়িতে পানিতে ধুয়ে পরিস্কার করি। এরপর লবণ দিয়ে রাখি। তারপর রোদে শুকিয়ে হাতে ভাজতে হয়। আর মেশিনে যারা মুড়ি ভাজে তারা হাইড্রোস মিশিয়ে মুড়ি বড় ও সাদা করে কম দামে বিক্রি করে। এদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া কষ্টকর। ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন অফিসের স্যানিটারি কর্মকর্তাদের মুড়িতে হাইড্রোস মেশানো মুড়ি ধরার জন্য হস্তক্ষেপ একান্ত জরুরি বলে মনে করেন মুড়ি তৈরীর কারিগররা। এটি স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে জানান সবাই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।