ঠাকুরগাঁও জেলায় ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা এক কিশোরীর সন্তানের জন্ম হয়েছে, যার পরিবার গর্ভপাতের কথা চিন্তা করেনি। ঠাকুরগাঁও জেলা মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শক মাহফুজা বেগম জানান, ২৭ অক্টোবর রবিবার বিকালে ১৩ বছর বয়সী ঐ কিশোরী মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। মা-মেয়ে সুস্থ আছে।
ধর্ষণের ঘটনায় ২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট কিশোরীর বাবা ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের টাকাহারা গ্রামের মোহিন চন্দ্র সিংহ (২৩)। অন্য আসামিরা হলেন তার ভাই বিদ্যানাথ চন্দ্র সিংহ (২১), বাবা প্রফুল্ল চন্দ্র সিংহ (৪৮) ও মা শ্রীমতী বালাকে (৪৫) আসামি করা হয়।
পুলিশ এখনও প্রধান আসামি মোহিনকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। মোহিনের বাবা প্রফুল্ল চন্দ্র ও শ্রীমতী বালাকে গ্রেপ্তার করার পর তারা জামিনে মুক্ত হন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বালিয়াডাঙ্গী থানার এসআই আমজাদ হোসেন বলেন, মোহিন ও তার ভাই বিদ্যানাথকে গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। এ মামলায় শিগগির আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। কিশোরীরর মা বলেন, প্রতিবেশী মোহিন তার মেয়েকে ধর্ষণ করার পর কাউকে না জানাতে হুমকি দেন। ভয়ে কিশোরী কাউকে কিছু বলেনি। কয়েক মাস পরে পরিবার জানতে পারে।
“বিষয়টি স্থানীয়দের জানানো হয়। তারা চুপ থাকার পরামর্শ দেয়। কারণ ধর্ষকের পরিবার হিন্দু সম্প্রদায়ের। তার পরও ঘটনাটি নিয়ে আমরা ধর্ষকের পরিবারের কাছে যাই। তারা বিষয়টি স্বীকার করে আমাদের টাকার লোভ দেখায়। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল মেয়েটিকে তাদের ঘরে স্থায়ীভাবে নিতে হবে। এতে ছেলের পরিবার রাজি ছিল না।” কিশোরীর পরিবার গর্ভপাতের কথা চিন্তা করেনি । কিশোরীর মা বলেন, “চোখলজ্জা ঢেকে আমরা তার গর্ভের বাচ্চাটি রেখে দিয়েছিলাম। এখন আমার শিশুসন্তানের কোলে আরেকটি শিশুর জন্ম হয়েছে। এখন এই সদ্য জন্ম হওয়া শিশুটি ও আমার মেয়েকে ওই ধর্ষকের পরিবারের কাছে স্থায়ীভাবে দিতে চাই। আমার মেয়ে ও তার শিশু বাচ্চাকে তারা যদি মেনে না নেয় তাহলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ আমাদের নেই।”

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।