বান্দরবানের থানছিতে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে ইট ভাটায় বন ধ্বংসের মহোৎসব।  থানছি হেডম্যান পাড়া সংলগ্ন এলাকায় ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে গাছপালা পোড়ানো হচ্ছে। জানা যায় প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে অদৃশ্য ক্ষমতায় গড়ে উঠেছে ইটভাটা টি।

ভাটা স্থাপনের বিধিমালা অমান্য করে ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে বেশির ভাগ আশপাশের বনাঞ্চল থেকে। এতে বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে বন। ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এসব অনিয়মের বিষয়ে কথা বলতে নারাজ অবৈধ ইটভাটা মালিক আনিসুর রহমান সুজন।

জানা গেছে, পরিবেশ ও বন আইনকে তোয়াক্কা না করে ইটভাটা টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও লোকালয়ের একশ-দুইশ গজের মধ্যে অবস্থিত। এর ফলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রয়েছে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে।

অন্যদিকে আশপাশের এলাকা থেকে পাহাড় কেটে ভাটায় মাটির জোগান দেয়া হচ্ছে। ভাটাটি তে কোনো প্রকার কয়লার ব্যবহার ছাড়াই নির্বিচারে বন এলাকার কাঠ পোড়ানোর কারণে এলাকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অধিকাংশ বন ইতোমধ্যে প্রাণীশূন্য হয়ে পড়েছে। অপরদিকে জনসাধারণের চলাচলের রাস্তায় ভারী যানবাহন চালিয়ে রাস্তার ক্ষতিসাধন করছে ভাটা মালিক। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রে ১২০ ফুট উঁচু কংক্রিটের তৈরি চিমনি স্থাপনের প্রত্যয়নপত্র ও ভ্যাট সার্টিফিকেট দাখিল করতে হয়। ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন-২০০১ এর ১৭ নম্বর ধারায় ইটভাটার লাইসেন্স দেয়ার ক্ষমতা জেলা প্রশাসকের। তিনি ইটভাটা পরিদর্শন করবেন বা তার সমমর্যাদার যে কোনো কর্মকর্তা পরিদর্শন করবেন। ইট পোড়ানো আইনের ধারা ৪৬৫-এর উপধারায় বলা হয়েছে, আবাসিক এলাকা, উপজেলা সদর, ফলের বাগান, বনাঞ্চল, লোকালয় ও জনবসতি এলাকার তিন কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। সর্বোচ্চ দেড় একর জমিতে নদী ও খালের ধারে ইটভাটা স্থাপন করার নিয়ম থাকলেও কোন টি মানা হয় নি। থানছি উপজেলায় এসব আইনের কোনো বালাই নেই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, ইট ভাটায় কোন কাঠ পোড়ানো হচ্ছে না।

অথচ সরোজমিনে দেখা গেছে কাঠ পোড়ানোর মহোৎসব চলছে।

একটি সূত্রে জানা গেছে, মাসিক মাসোহারে নিয়ে ঐ কর্মকর্তা জেলা সদরে বসে ভাটা মালিক কে সহায়তা করে থাকে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক মৃদুল বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের অসহযোগীতার কারণে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী কমিশনার কামরুল আহসান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ পরিবেশন করতে বলেন যার প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম বলেন, বিষয় টি আমি দেখছি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।