ঠাকুরগাঁও শহরে পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অসহায় মানুষদের জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত রবিবার ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে ৫০ জন ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্ত একরামুল দৌল্লা ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

অভিযোগে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে পৌর কাউন্সিলর একরামুল দৌলা সাহেব জাল দলিল তৈরি করে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা হুমকি দিয়ে শহরের ছিট চিলারং এলাকার নিরীহ মানুষদের ঘরবাড়ি ও জমি দখল করে আসছে। কিছুদিন পূর্বে কাজীপাড়া এলাকার আইনুল হক ও তার ভাইদের ১ একর ৭৪ শতক জমি দখলের চেষ্টা করে পৌর কাউন্সিলর একরামুল দৌল্লা সাহেব সহ তার লোকজন। এছাড়াও ছিট চিলারং এলাকার সালেহা বেগমের ১০ শতক ও একই এলাকার মোজাম্মেল হকের সাড়ে ২৯ শতক জমি দখলের চেষ্টা করে পৌর কাউন্সিলর একরামুল ।

ভুক্তভোগী আইনুল হক বলেন, ১৯৬১ সালে কবলা মূলে ১ একর ৭৪ শতক জমি ক্রয় করি। এরপর থেকে সেই জমিতে আখ, সরিষা সহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করা হচ্ছে। এদিকে পৌর কাউন্সিলর একরামুল দৌল্লা সাহেব আমার ক্রয়কৃত জমির একটি জাল দলিল তৈরি করে তিনি ওই জমি তার দাবি করে আসছে। কিছুদিন আগে কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে তার সন্ত্রাসী বাহিনী মাজহারুল ইসলাম, আমির হোসেন, আব্দুল মোমিন সহ আরও বেশ কিছু মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে এসে আমাদেরকে হুমকি দেয় জমি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য।

একই এলাকার বাসিন্দা জামিরুল ইসলাম বলেন, পৌর কাউন্সিলর একরামুল দৌল্লা সাহেব শুধু আইনুল হকের জমি দখলের চেষ্টাই করেনি; তারা ইতিমধ্যে এলাকার অসংখ্য মানুষের জমি ভয়ভীতি দেখিয়ে দখল করে নিয়েছে। কাউন্সিলরের কাজই হলো জাল দলিল তৈরি করে মানুষকে হুমকি দিয়ে জমি দখল করা ।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, এলাকার মানুষের ভোটে একরামুল দৌল্লা সাহেব পৌর কাউন্সিলর হয়েছে; কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকে কাউন্সিলর একরামুল অনেকের জমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। সে একটি বাহিনী তৈরি করেছে অসহায় মানুষদের জমি দখল করার জন্য। একই প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় পৌর কাউন্সিলর একরামুল দৌল্লা সাহেব হুমকি দিয়ে কৌশলে অসহায় মানুষদের জমি দখল করে অনেক টাকার মালিক হয়েছে। জমি ছেড়ে চলে না গেলে এলাকার মানুষদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীও করে কাউন্সিলর। বর্তমানে কাউন্সিল একরামুলের ভয়ে এলাকার মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারছেনা বলে দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দা আল মামুন। পৌর কাউন্সিলর একরামুল প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এজন্য বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রশাসনের সহযোগিতা চায় স্থানীয়রা।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, পৌর কাউন্সিলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে; সেটি তদন্ত করার পর সত্যতা পাওয়া প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগ অস্বীকার করে পৌর কাউন্সিলর একরামুল দৌলা বলেন, আমার বিরুদ্ধে জমি দখলের চেষ্টার যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সত্য হয়। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে তাহলে তাকে আমি ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দিব।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।