মাসিক বিষয়টা শুধু মেয়েদের বুঝালেই হবে না, এটা নিয়ে ছেলেদের সঙ্গেও কথা বলা সমান জরুরি। এটা স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক বিষয়, তাই এটা নিয়ে লুকোচুরি বা গোপনীয়তার কিছু নাই। ২০১৪ সালে ৬ ভাগ স্কুলে মাসিক নিয়ে শিক্ষা দেয়া হতো সেখানে ২০১৮ সালে ৩৬ ভাগ স্কুলে মাসিক নিয়ে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং উন্নত মাসিক ব্যবস্থাপনার সুবিধা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে মঙ্গলবার ‘মাসিক স্বাস্থ্য দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদফতর, ইউনিসেফ বাংলাদেশ এবং এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম যৌথভাবে কাকরাইল জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদফতর ভবনে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়ির সচিব এস এম গোলাম ফারুক, অতিরিক্ত সচিব বেগম রোকসানা কাদের, ইউনিসেফ’র ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ মায়া, প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রাহমান।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শর্মিষ্ঠা দেবনাথ। প্রবন্ধে তিনি বাংলাদেশে নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত চিত্রটি তুলে ধরেন।

এ বছর মাসিক স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়, ‘মাসিক ব্যবস্থাপনায় সচেতন হই, আজই এখনই’ স্লোগানকে সামনে রেখে প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রাহমান জানান, ‘আমরা কাজ করছি এসডিজি ৩, ৫ এবং ৬ নিয়ে। আগে আমারা দেখতাম ৩০-৪০ ভাগ ছাত্রীরা মাসিকের সময় স্কুলে অনুপস্থিত থাকতো। এখন এ হার আরও অনেক কমে এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার একটি নারী বান্ধব সরকার। অন্যান্য অগ্রগতির পাশাপাশি নারীদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে সরকার।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়ির সচিব এস এম গোলাম ফারুক বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে এখন ৩২ হাজার ওয়াশবল্ক আছে। সরকারের ভিশন হচ্ছে ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে এগিয়ে যাবে। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আর মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের নিরাপদ মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সুযোগ করে দিতে হবে। মাসিক পণ্য বিশেষ করে স্যানিটারি প্যাড বাজারে সুলভ করা দরকার যাতে সব স্তরের নারীরা তা ব্যবহার করতে পারে। এছাড়াও আমাদের একটি কৌশলপত্র তৈরি করতে হবে যাতে মাসিক নিয়ে সর্বস্তরের অংশগ্রহণে কাজ করা যায়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে এ অনুষ্ঠানে আসার আগে মাসিক নিয়ে কোনো কথা বলিনি এবং এখানে এসে আমার সবচেয়ে যে উপকার হয়েছে তাহলো মাসিক নিয়ে কথা বলতে যে অস্বস্তি ছিল তা কেটেছে। সরকার নারীদের কল্যাণে কাজ করছে এবং সরকার চায় নারীরা সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, সুবিধাবঞ্চিত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী তারা ময়লা কাপড় ব্যবহার করে যা আসলে স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সুলভ মূল্যে প্যাডের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে সবাই ব্যবহার করতে পারে। বাংলাদেশের ৫০ ভাগ নারী। কাজেই তাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার প্রতিগুরুত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। কারণ যদি তাদের সুস্বাস্থ্য না থাকে তবে আমরা উন্নত বিশ্ব হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পরব না।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।