প্রকৃতি ও অভাবের কাছে হার না মানা অদম্য মেধাবীর গল্প ও সমাজের কিছু হৃদয়াবান ব্যক্তির এগিয়ে আসা 

জন্ম থেকে দুটি হাত, ডান পা নেই তামান্না আক্তারের। একটিমাত্র পা দিয়ে লিখেই এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে যশোরের ঝিকরগাছার সংগ্রামী এ কিশোরী।
তামান্না উপজেলার পানিসারা গ্রামের রওশন আলী-খাদিজা পারভীন দম্পতির মেয়ে।

গত সোমবার দুপুরে ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে তার বাড়িতে। সে পিইসি-জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিল।

এক পায়ে লিখে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পাওয়া তামান্নার বাবা রওশন আলীর দুশ্চিন্তা কেটেছে। ঢাকার ধানমন্ডির ব্যবসায়ী মোমিনুল হাসান তামান্নার উচ্চশিক্ষার সব খরচ বহনের কথা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া জে কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার তামান্না এক পায়ে লিখে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছে। এর আগে তামান্না ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতেও বৃত্তি পেয়েছিল। স্থানীয় আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা তামান্নার জন্ম থেকে দুই হাত ও এক পা নেই। কিন্তু তার বুকে অদম্য সাহস রয়েছে।

এই সাহস হচ্ছে জ্ঞান অর্জনের। তার স্বপ্ন হচ্ছে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে বিসিএস কর্মকর্তার খাতায় নাম লেখানো। কিন্তু তামান্নার বাবা রওশন আলী একটি নন এমপিওভুক্ত মাদরাসার শিক্ষক। তার পক্ষে তিনটি সন্তান লালনপালন ছাড়াও তামান্নাকে উচ্চশিক্ষা করানো খুবই কঠিন। এ জন্য তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এখন আর তার দুশ্চিন্তা নেই।

তামান্না জানায়, সাংবাদিকরা আমাকে নিয়ে অনেক লেখালেখি করেছে। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। একপায়ে লিখে আমি ভালো ফল করতে পেরেছি আমার বাবা-মা ও শিক্ষকদের ভালবাসায়। আগামীকে আমি আরো ভালো ফল করতে পারবো বলে সংকল্প গ্রহণ করেছি।

ব্যবসায়ী মোমিনুল হাসান বলেন, তামান্নাকে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি কলেজ হোস্টেলে রেখেও আমরা তার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। তামান্নার মনে যে সাহস, আমরা সেই সাহসকে আরো শানিত করে তামান্নার জ্ঞানের পথে আলো জ্বালতে চাই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।