চট্টগ্রাম সংবাদদাতা;  নমুনা দিয়ে ১৭ দিনেও রিপোর্ট পাননি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা জাহান উপমা। তাই বাধ্য হয়ে যোগ দিয়েছেন কর্মস্থলে। কয়েকটি অভিযানও পরিচালনা করেছেন। তবে এর মধ্যে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ করেছেন তিনি।

  • গতকাল সোমবার (২২ জুন ২০২০)  নিজ কার্যালয়ে যোগ দেন উপমা। পরে পটিয়া পোস্ট অফিস মোড়, আদালত রোড, সবুর রোড, ক্লাব রোড, স্টেশন রোড, ডাকবাংলো মোড়, মুন্সেফ বাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন তিনি। জনসমাগম হওয়ায় এবং স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দোকান খোলায় তিনটি প্রতিষ্ঠানের মালিককে ৮ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করেন ইউএনও।

ইউএনও ফারহানা জাহান উপমা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নমুনা দিয়েছি ১৭ দিন আগে, রিপোর্ট আসেনি। বাসায় বসে থেকে কী করব? শারীরিকভাবে বেশ সুস্থ বোধ করছি। এ ছাড়া ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন পালন করেছি। কোনো রিপোর্ট না আসায় গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে কাজে নেমেছি।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘আমার শরীরে কোনো উপসর্গ নেই। পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আমাকে।’

  • ফারহানা জাহান উপমা বলেন, ‘মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে হাট-বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরার কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। আমি বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছি। এ ছাড়া উপায় নেই। কারণ, পরিণাম যেকোনো সময় ভয়াবহ হতে পারে। রিপোর্টের অপেক্ষায় থাকলে সাধারণ জনগণের অবস্থা বেগতিক হয়ে পড়বে। আমার দায়িত্ব কাজ করা, সবকিছু মাথায় রেখেই কাজ করছি।’

গত ৭ জুন ইউএনও উপমার গাড়িচালক দেলোয়ার হোসেন, বাসার মালি করোনা আক্রান্ত হন। ৮ জুন পুরো পরিবারসহ নমুনা পরীক্ষার জন্য দেন ফারহানা জাহান উপমা। এখনো তাদের প্রতিবেদন আসেনি।

  • পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ জাবেদ জানান, চট্টগ্রামে জটের কারণে নমুনাগুলো পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। তবে কয়েক দিনের মধ্যে ফলাফল আসতে পারে।

এদিকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ (২৩ জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৩ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ১৫৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৪১২ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ১৯ হাজার ১৯৮জনে। আজ নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৬ হাজার ২৯২ টি যা গতদিনে ছিল ১৫৫৫৫ । গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৫টি পরীক্ষাগারে নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৭ হাজার ৫৬৩টি। আর পূর্বের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৬ হাজার ২৯২টি। মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ১১টি। ২৪ ঘণ্টায় এই সংগৃহীত নমুনা থেকে শনাক্ত রোগী পেয়েছি ৩ হাজার ৪১২ জন। এ পর্যন্ত শনাক্ত ১ লাখ ১৯ হাজার ১৯৮ জন। শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৯৪ শতাংশ।’‘২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ৮৮০ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৪৭ হাজার ৬৩৫ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছে ৪৩ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু দাঁড়ালো ১ হাজার ৫৪৫ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। মৃত্যু বিশ্লেষণে পুরুষ ৩৮ জন এবং নারী ৫ জন।’ বয়স বিশ্লেষণে , ‘১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর ৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর ১৮ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছর ১০ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছর ৫ জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ২ জন মারা গেছে।’

আমাদের বাণী ডট কম/২৩ জুন ২০২০/পিপিএম 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।