গাইবান্ধা জেলা সংবাদদাতা; জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ শতক জমি জোর পুর্বক জবর দখলের অভিযোগ করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।পাশাপাশি সরকারি জমি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মান কাজ বন্ধ রাখার জন্য জেলা প্রশাসকের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সরেজমিন তথ্যানুসন্ধান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির একাধিক সদস্য জানান, উপজেলার মহদীপুর ইউপির চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয় ১৯৬৮ সালে। উক্ত এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মৃত ইয়াকুব আলী, তৈয়ব আলী ও আইয়ুব আলী ১৯৭৫ সালে চন্ডিপুর মৌজার জেএল নং ৭৬ সাবেক ৭ ও ৮ দাগ নম্বর মুলে ২৬ শতক জমি চন্ডিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে দলিল মুলে রেজিস্ট্রেশন করে দেন। সেই থেকে বিদ্যালয় উক্ত জমি ভোগ দখল করে আসছিল। সময়ের ব্যাবধানে ২৬ শতক জমির মধ্যে ২২ শতক জমি রের্কড হয় বিদ্যালয়ের নামে বাকি ৪ শতক জমি অবৈধ ভাবে দখলে নেয় একই গ্রামের কাশেম ফকিরের ছেলে মাজেদ ও মান্নান । স¤প্রতি বার্ষিক উন্নয়ন সহায়তা তহবিল এডিপি প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মানের জন্য বরাদ্দ প্রদান করা হলে ৪ শতক জমি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি দখলকারীরা আবারো ২২ শতকের মধ্যে থেকে তাদের দখলকৃত জমিতে থাকা বসতবাড়ীতে যাওয়ার রাস্তা দাবী করছে। কাজ শুরু দিকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস সালামসহ অন্যান্য সদস্যরা উক্ত জমি উদ্ধার করে সীমানা প্রাচীর নির্মানের জন্য প্রধান শিক্ষক একেএম রেজাউল করিম মন্ডলকে অনুরোধ জানান। এদিকে উক্ত বিদ্যালয়ের জমি দখলকারীগং কে প্রধান শিক্ষক আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন বলে দাবী করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা ।

প্রধান শিক্ষক মৌখিক ভাবে বিষয়টি উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম ও শিক্ষা অফিসার( ভারপ্রাপ্ত) আব্দুস ছালামকে অবগত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ জুন পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদুৎ উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান বিষয়টির যথাযথ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে সরেজমিন বিদ্যালয় পরিদর্শনে যায়। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের ২৬ শতক জমি সার্ভেয়ার দ্বারা মেপে বের করে বাউন্ডারি নির্মানের জন্য নির্দেশ দেয়। ঘটনার পর দিন উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার বিদ্যালয়ের ২৬ শতক জমির মধ্যে ২২ শতক জমি মাপ দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ফলে বিদ্যালয়ের নামে দলিলকৃত অবশিষ্ট ৪ শতক জমি বেদখল রেখেই বিষয়টি অমিমাংসিত থেকে যায়।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুস ছালাম,ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম,বুলু মিয়া, মোকছেদ মিয়া,কবিতা বেগম, আঙ্গুরী বেগম ও শিক্ষক প্রতিনিধি জাফরুল ইসলাম বলেন, জবরদখল কারীদের নিকট থেকে সরকারি জমি উদ্ধার করে সীমানা প্রাচীর নির্মান করা হলে কোন ভাবেই সরকারি এই সম্পতি কেউ ভোগ দখল করতে পারবে না। তারা সরকারী সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম রেজাউল করিম জানান বিদ্যালয়ের সমুদয় জমি উদ্ধারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে অবগত করেছি।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি একটু আগেই আমি জেনেছি বিদ্যালয়ের ২৬ শতক জমির মধ্যে ভুল ক্রমে ২২ শতক জমির রেকর্ড হয়েছে। দলিল মুলে ২৬ শতক জমির রেকর্ড করার জন্য ভুমি অফিসে রেকর্ড সংশোধনীর আবেদন করার জন্য প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছি।আগামী কাল ২ জুলাই প্রধান শিক্ষক রেকর্ড সংশোধনীর জন্য ভুমি অফিসে এই আবেদন দাখিল করবেন।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আব্দুস ছালাম জানান,আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছি বিষয়টি আমি অবগত। ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় বিষয়টি নিস্পত্তি করে দিয়েছেন।কি ভাবে নিস্পত্তি হলো জানতে চাইলে তিনি বলে যে টুকু জমি দখলে আছে সেখান থেকেই সীমানা প্রাচীর উঠবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়ন জানান আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি জমি ২৬ শতক দলিলে থাকলে ও বর্তমান রেকর্ডে রয়েছে ২২ শতক। আমরা ২২ শতকের উপর ভিত্তি করে প্রাচীর নির্মানের সিদ্ধান্ত দিয়েছি।আর মানবিক কারনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের যাতাযাতের জন্য ৪ ফিট জায়গা ছেড়ে দেওয়া প্রস্তাব উছেঠে।তবে বিষয়টি এখনো অমিমাংসিত রয়েছে।

আমাদের বাণী ডট কম/০১ জুলাই  ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।