জয়পুরহাট সংবাদদাতা; প্রথম দিকে রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয় জয়পুরহাটে। তখন ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত হয় এ জেলা। নমুনা সংগ্রহের সাথে সাথে ফলাফলও পাওয়া যেত ২৪ ঘন্টায়। অথচ গত ১২ দিন ধরে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের নমুনা পরীক্ষা ফলাফলের কোন তথ্য জানাতে পারেনি জয়পুরহাটের স্বাস্থ্য বিভাগ।

  • গত ২ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত পাঠানো ৮৬৪ জনের নমুনার ফলাফল ১৪ জুন বেলা ১১টা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আবার গত এপ্রিল ও মে মাসে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পাঠানো ১৫৭ জনের নমুনার ফলাফলও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে জেলার ১ হাজার ২১ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলের কোন তথ্য দিতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগ।

এসব ফলাফল প্রদানে বিলম্বের কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে এমন আতঙ্কে দিন পার করছেন জয়পুরহাটবাসী। আবার স্বাস্থ্য বিভাগও সংক্রমনের ঝুঁকি বাড়ছে এমন আশঙ্কা করেছেন।

  • জয়পুরহাট জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ জেলার পাঠানো নমুনা পরীক্ষা শুরু হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে। তখন এ জেলার নমুনা পরীক্ষার ফলাফল খুব দ্রুতই পাওয়া যেত। পরবর্তীতে তা বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব এবং ঢাকার শেরে বাংলা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরী মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে পাঠানো হয়।

তবে সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কিট সঙ্কটের কারণেই ওই ল্যাবগুলো নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাঠাতে বিলম্ব করছে। নমুনা পরীক্ষা বিলম্ব হওয়ার কারণে জেলায় করোনা আক্রান্তের ঝুঁকিও বাড়ছে।’ তিনি আরও বলেন, বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল ল্যাবে ৯৮ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে গত মে মাসের ২৪ তারিখে। অথচ সেগুলোর কোন রিপোর্ট এখন পর্যন্ত আমরা পাইনি। বারবার তাগাদ দিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। আবার রাজশাহীতে জমা থাকা ৫৯ জনের নমুনারও কোন রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। জেলায় এ পর্যন্ত ২১২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ১২ দিন ধরে ফলাফলের কোন রির্পোট না পাওয়ায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যাও জানানো সম্ভব হয়নি।

  • সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিয়া বলেন, ‘গত ২ জুনের পর থেকে জেলায় করোনাভাইরাস শনাক্তের নমুনা পরীক্ষার কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। ঢাকায় গত ১ জুনে পাঠানো নমুনার ফলাফল এসেছে ৬ জুনে। এরপর আর কোনো নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যায়নি।’ ঢাকায় ৮৬৪ জন, রাজশাহীতে ৫৯ এবং বগুড়ায় ৯৮ জনসহ মোট ১ হাজার ২১ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল না পাওয়ার কথা তিনি নিশ্চিত করেছেন। ফলাফল বিলম্বের কারণে জেলায় করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি বাড়ছে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করলেও কি কারণে বিলম্ব ঘটছে তার কোন ব্যাখ্যা দেননি।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (১৪ জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ১১৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩  হাজার ১৪১ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৮৭  হাজার ৫২০জনে। গতকাল নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল ১৬ হাজার ৬৩৮টি আর আজ পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪৫০৫ টি। নমুনা পরীক্ষা কমলেও বেড়েছে শনাক্তের সংখ্যা ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৯০৩ জন। ফলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মোট ১৮ হাজার ৩৩১ জন।

আমাদের বাণী ডট কম/১৪জুন ২০২০/ডিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।