কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলা শহরের রাজীবপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপ্লবী আক্তারের বিরুদ্ধে ফি আত্মসাত,শিক্ষকদের সাথে অসাদাচরণ, স্কুলের দপ্তরি কাম প্রহরীকে বাড়ির ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্কুলের সকল সহকারী শিক্ষকদের লিখিত এক অভিযোগে ওইসব তথ্য জানা গেছে। আজ বুধবার ওই স্কুলের পিয়নসহ ১০ জন সহকারী শিক্ষক সাংবাদিকদের কাছে ওইসব অভিযোগ করেন। এর আগে গত ২৪ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগের তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগের তদন্ত না করে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। একই সঙ্গে অভিযোগকারী শিক্ষকদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেন। এমন অভিযোগ করেছেন অভিযোগকারী সহকারী শিক্ষকরা।

অভিযোগে জানা গেছে, স্কুলের দপ্তরি কাম প্রহরীকে চাকরি খাওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক বিপ্লবী আক্তার তার বাড়ির ব্যক্তিগত কাজ করাতে বাধ্য করেন। শিশু ও প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির সময়ে শিশু প্রতি ৭০ টাকা করে ফি তুলে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। স্কুলের সম্পত্তিতে দুটি বড় রেন্ট্রিকড়ই গাছ তিনি একক সিদ্ধান্তে কেটে তা বিক্রি করেন এবং গাছ বিক্রির প্রায় ৮০ হাজার টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। এসএমসি ও পিটিএ’র কোনো কমিটি নেই। শিক্ষার মানোন্নয়নে সহকারী শিক্ষকরা কোনো প্রস্তাব দিলে তিনি তা গ্রহণ না করে উল্টা শিক্ষকদের গালিগালাজ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষক বলেন, তদন্ত কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়ে প্রধান শিক্ষক তার অনিয়ম দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এমনকি তদন্ত কর্মকর্তাকে দিয়ে আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে মিমাংসা হওয়ার জন্য।

প্রধান শিক্ষকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ সহকারী আরেক শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা লেগেই থাকে। এ অবস্থায় প্রধান শিক্ষককে বদলি করে অন্য প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হলে এ প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরে আসবে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বিপ্লবী আক্তার বলেন, আমি শিক্ষকদের ফাঁকিবাজিকে প্রশ্রয় দেই না। এ কারণে সকল শিক্ষক জোটবদ্ধ হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ধামাচাপা দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তদন্ত শেষ হলেই প্রতিবেদন জামা দেব।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো বলেন, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়গুলো আমার কানেও এসেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।