বর্তমান সরকার শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যার ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক, ছাত্রছাত্রীদের জানুয়ারী মাসের ১ তারিখে বিনামূল্যে বই বিরতণ, স্কুল ফিডিং, উপবৃত্তি প্রদান, স্লিপ কার্যক্রম, শিক্ষকদের বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে।
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড আর প্রাথমিক শিক্ষা এর সূতিকাগার। এসি রুমে সকল রকম আধুনিক সুযোগ সুবিধা দিয়ে গর্ভবতী মায়ের বাচ্চা প্রসব করানো হয় আর যদি বাচ্চার নাড়ি কাটা হয় মরিচা পরা ব্লেড দিয়ে তাহলে কি দাঁড়াবে? ঠিক তেমনি,
ভবিষ্যৎ জাতি গঠনে প্রাথমিকের কারিগর/শিক্ষক নিয়োগে বিভিন্ন কোটা
(যেমন ৬০% মহিলা কোটা, ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা, উপজাতি,এতিম,প্রতিবন্ধী ১০% আনসার ভিডিপি কোটা ২০% পোষ্য কোটা ২০% ইত্যাদি) পদ্ধতির বেঁড়াজালে সাধারণ মেধাবীদের সুযোগ সৃষ্টি না হওয়ায়, শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নে যথেষ্ট বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ হলেই দেশে ভবিষ্যৎ যোগ্য নাগরিক পাওয়া সম্ভব।
শিক্ষার মান বাড়লেও গুনগত মান বাড়েনি। গত শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিভাগে ভর্তি পরীক্ষায় মাত্র ৩ জন শিক্ষার্থী পাস করেছিল, এছাড়া মাছরাঙা টিভির রিপোর্টে দেখা যায় জিপিএ ফাইভ পাওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে ভালো ধারণা নেই। এমন কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে, Gpa-5 পাওয়া শিক্ষার্থী তার বন্ধুকে লিখে i am got Gpa 5 এবং আমি জিপিএ ৫ পেয়েছি ইংরেজিতে বলতে গিয়ে বলে, I am got Gpa 5 ।
১৯৭১ সালে দেশমাতৃকাকে স্বাধীন করতে দেশের সূর্য সন্তানরা অনেক ত্যাগ তিতীক্ষা করেছেন। তাদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকুরী ক্ষেত্রে বিশেষ কোটা দিয়ে দেশ মাতৃকার কাজে লাগানোই স্বাভাবিক কিন্তু যেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ জীবন বিনির্মাণে জড়িত সেই শিক্ষা বিভাগ ছাড়া দেশে আরো অনেক সরকারি চাকরি আছে যেখানে তাদের সুযোগ সৃষ্টি করা সময়োপযোগী ।
মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতে শিক্ষক নিয়োগে সকল প্রকার কোটা পদ্ধতি বিলুপ্ত করে, সমযোগ্যতা সম্পন্ন মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ করে, ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে এখনই বিষয়টির প্রতি নজর দেওয়া জরুরি।
লেখক: মুহাম্মদ মাহবুবর রহমান (চঞ্চল), সহকারী শিক্ষক। ক্ষেতলাল, জয়পুরহাট।