এদেশের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে হলে শিক্ষা বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, শিক্ষার ভিতে দাঁড়িয়েই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাজেট পরিকল্পনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে শিক্ষা খাতকে। এমনিতে শিক্ষায় যে বাজেট আমরা পাই সেটি অনেক বেশি, তবে সব খাতকে ভাগ করে দেওয়ার পর সেটাকেই অনেক কম মনে হয়।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘আগামী বাজেটে ও শিক্ষাখাত: আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষার প্রসারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে এদিন বক্তব্যে দীপু মনি বলেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ইশতেহার যদি আপনি দেখেন, সেখানে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা খাতে জিডিপির ৪ শতাংশ খরচ করার কথা বলেছিলেন। সামাজিক পরিকল্পনা বঙ্গবন্ধুর এই পরামর্শ গ্রহণ করার অনুরোধ থাকলো।

সকল শিশুকে স্কুলে আনার সরকারের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, এখন আমাদেরকে শিশুদের ঝরে পড়ার হার কমাতে হবে। তারা যেন নির্বিঘ্নে শিক্ষা জীবন শেষ করতে পারে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

শিক্ষা খাতে বর্তমান সরকারের অবদান স্মরণ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিছু কিছু পরিবর্তন হয়। গত ১০ বছরে অনেকগুলো বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু শিক্ষায় সরকারের মনোযোগ কমেনি। আপনাদেরকে বুঝতে হবে এই সরকার শিক্ষা-বান্ধব সরকার। ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের যে নির্বাচনি ইশতেহার ছিল সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন,আমাদের জিডিপির অন্তত চার ভাগ শিক্ষার ক্ষেত্রে থাকবে। বিশ্বের অনেক দেশ এটি চার এর ওপরে আছে। আমাদের সমপরিমাণও আছে। আবার আমাদের চেয়ে কমও আছে। আমরা তো সেই সব দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেই। আমরা চাই শিক্ষাকে এগিয়ে যাবো অনেক দূর।

প্রাইমারি স্কুলে ঝরে পড়ার হার কমাতে বিনামূল্যে দুপুরের খাবার বা ‘মিড ডে’ মিলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, স্কুলে খাবারের ব্যবস্থা থাকলে শিশুরা এমনিতেই স্কুলে আসবে। মিড ডে মিল খুব জরুরি, কারণ মেধার সঙ্গে পুষ্টির সংযোগ রয়েছে। এখন কেবল খাবার নয় পুষ্টির দিকেও আমাদেরকে মনোযোগ দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ১০ বছরে শিক্ষার ক্ষেত্রে যেমন বরাদ্দ দিয়েছে তার পাশাপাশি বড় বড় মেগা প্রজেক্টগুলো বাস্তবায়নের জন্যও কাজ করছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন আমাদের জন্য খুবই জরুরি। আর সেই প্রকল্পগুলোর জন্য আমাদের প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে এবং হচ্ছে। তারপরও শিক্ষাকে আমরা অবহেলা করেনি। এখন প্রয়োজন আরও বেশি শিক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দ দেওয়া।

শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তৃতায় ‘মিড ডে’ মিলের জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়ারও অনুরোধ করেন।

‘মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটস’-এর আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ডা. এস এম দিলোয়ার রানাসহ আরো অনেকে।

[wpdevart_like_box profile_id=”https://web.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।