শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট সংবাদদাতা; দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট বেশ কয়েকটি জেলার উপজেলায় গ্রামগুলোতে তোলপাড় চলছে পল্লিবিদ্যুৎ মনগড়া বিল নিয়ে।প্রতিমাসে প্রস্তুত করা হয় বিদ্যুৎ বিল। গ্রাহকেরা সময়মত পরিশোধ করে চলছে ধার্য্যকৃত বিল। কিন্তু ওই বিল তৈরি করতে মিটার রিডাররা গ্রাহকের বাড়িতে না গিয়ে মনগড়া বিদ্যুৎ বিল তৈরি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা কার্যালয়ের কক্ষে বসেই বিল তৈরি করছে। এরমধ্যে শত ভোগান্তি পেরিয়ে কয়েকজন সচেতন গ্রাহক বিল সংশোধন করেন। কিন্তু অধিকাংশ গ্রাহক প্রতারিত হচ্ছে।

পল্লিবিদ্যুৎ কর্মরত অনেকেই বলছেন সার্ভিস তারে ব্যাপক বিদ্যুৎ খায় যা মিটার রিডিং এ দেখা যায় না তাই বিলের পরিমান বেশি আসে যা সর্ম্পূনই ভিত্তিহীন। এদিকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে গ্রাহকরা বকেয়া মাশুল ছাড়া তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল একসঙ্গে দেয়ার সুবিধা পেলেও মনগড়া বিল নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেকেই। অতিরিক্ত বিল কিভাবে সমন্বয় হবে এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে কোনো সদুত্তরও পাচ্ছেন না।

এ অবস্থায় করোনা ঝুঁকির মধ্যেই তাদের বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন অফিসে ধরনা দিতে হচ্ছে।পল্লি বিদ্যুৎ অবশ্য বলেছে, অতিরিক্ত টাকা সমন্বয় করে বিল পাঠানো হয়েছে। ৫-৭ দিনের মধ্যে গ্রাহকরা জুন মাসের যে বিল পাবেন তাতে অতিরিক্ত টাকা সমন্বয় করা থাকবে।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিলে জানা যায়, পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিস পিরোজপুর আওতায় প্রায় ৩ লাখ ৭২হাজার ৮শ, ৯৫ গ্রাহক রয়েছে। গ্রাহকদের নামে ভুয়াবিল প্রদান সহ প্রতিমাসে বিল নিয়ে এর আগেও কম-বেশি অভিযোগ ছিল। তবে এবারের অভিযোগ আগের তুলানায় আরও ব্যাপক। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে বিল নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও টিভি নেই। তাদের বেলায়ও মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হয়েছে।

বিল নিয়ে ভোগান্তির শিকার একাধিক বাসিন্দা জানান, মার্চ এপ্রিল মে এই তিন মাসের বিল আগের মাসগুলোর তুলনায় তিনগুন করা হয়েছে। এই দুই মাস বাসায় মিটার রিডারও দেখতে আসেননি কেউ। মিটার না দেখে অনুমান করে বিল করা হয়েছে। এখনও জুন মাসের বিল তারা পাননি। এ কারণে এই বিল পরিশোধ করেননি।

তারা বলেন, স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসগুলো এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারছে না। আবার অনেকে বলছেন পূর্বের মাসগুলোর বিল পরিশোধ করলেও নতুন মাসের তৈরী করা বিলে পূর্বের পরিশোধ করা বিল বকেয়া বিল হিসেবে যোগ করা হয়েছে।

পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মোরেলগঞ্জ আঞ্চলিক অফিসের প্রকৌশলী জানান, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের কারনে ব্যবহারের পরিমান বেশি হওয়ায় গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎবিল বেশি মনে হচ্ছে। করোনার কারনে রিডার কোন বাড়িতে ঢুকতে পারেনি তাবে পরে সমন্বয় করা হবে। আমরা পিরোজপুর পল্লিবিদ্যুৎ সমিতিতে কথা বলেছি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মোরেলগঞ্জ আঞ্চলিক অফিসের ডিজিএম দিলীপ কুমার বাইন বলেন ভুয়া বিলের কোন সূযোগ নেই আমাদের পল্লিবিদ্যুৎ। মিটারের রিডিং এর বাহিরে অতিরিক্ত বিল হয়ে থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম প্রকৌঃ মোঃ মফিজুর রহমান এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন,পল্লী বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রকৌশলীকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।শেখ সাইফুল ইসলাম কবির

আমাদের বাণী ডট কম/১৯   জুন ২০২০/পিপিএম 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।