বন্ধুর বাবার বিয়ে ঠেকাতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছয় শিক্ষার্থী। মারধরের পর তাদেরকে পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এ ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে তারা তাড়াশ থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

শিক্ষার্থীরা হলেন, জাবির বাংলা বিভাগ ৪২তম ব্যাচের রকিবুল হাসান, নাট্যতত্ব বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফ মেহেদী, রিশা আইরিন, রেদোয়ান মাহফুজ, ক্যামেলিয়া চুঁড়া ও দিপংকর বড়ুয়া।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের সবুজতারা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের (৭০) মেয়ে রিশা আইরিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যতত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী। কয়েকদিন আগে তিনি ছুটিতে বাড়ি আসেন। এ সময় তার বাবা আব্দুস সামাদ দ্বিতীয় বিয়ের জন্য প্রস্তুতি শুরু করলে রিশা বিষয়টি টের পেয়ে তার পাঁচ বন্ধুর কাছে সাহায্য চান।

এর প্রেক্ষিতে রবিবার সন্ধায় বন্ধুরা তাড়াশে গিয়ে রাতে রিশার বাবার সাথে বিয়ে প্রসঙ্গ নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে রিশার বাবা স্থানীয়দের ডেকে এনে তাদেরকে পিটুনী দেন। খবর পেয়ে তাড়াশ থানা পুলিশ রাত ২টার দিকে রিশাসহ ছয় জনকে থানায় নিয়ে যায়।

এদিকে, ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আজ সোমবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে খোঁজ-খবর নেয়া শুরু করলে বিপাকে পড়ে পুলিশ। পরে সামাদসহ স্থানীয়রা তাড়াশ থানায় পুলিশের আলোচনা করেছেন বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে রিশার বাবা আব্দুস সামাদ সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমার স্ত্রী নাজমুননাহার (৬০) পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে ১৫ বছর ধরে শয্যাসায়ী। তাকে আমি নিজেই দেখাশোনা করে আসছি। কিন্তু এখন নিরুপায় হয়ে দ্বিতীয় বিয়ের চিন্তাভাবনা করছি।’ এ নিয়ে তার মেয়ে বন্ধুদের ডেকে এনে তাকে লাঞ্ছিত করে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদেরকে জানান, ‘আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদেরকে নিজ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেবার প্রক্রিয়া চলছে।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।