বিপিএল ২০২৩: টানা পাঁচ জয়ের রেকর্ড সিলেট স্ট্রাইকার্স এর

বিপিএল ২০২৩: টানা পাঁচ জয়ের রেকর্ড সিলেট স্ট্রাইকার্স । বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) টানা পাঁচ ম্যাচ জিতল সিলেট স্ট্রাইকার্স। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বাধীন দলটি ঢাকা পর্বের প্রথম অংশেই জিতেছিল চারটি ম্যাচ। এবার চট্টগ্রামেও প্রথম ম্যাচেই জিতল মাশরাফি-মুশফিকদের অভিজ্ঞ সিলেট দল। তাতে আসরের প্রথম পাঁচ ম্যাচের সবগুলোই জিতে পরিষ্কার ব্যবধানে শীর্ষে সিলেট।

শেষ পর্যন্ত শিরোপা জিততে পারবেন কি-না তা সময়ই বলে দিবে। তবে এখন পর্যন্ত যেভাবে খেলছে দলটি তাতে যোগ্য দাবীদার তারাই। আর মাশরাফির চৌকশ নেতৃত্বেই দলটি উড়ছে বলে মনে করেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিম, ‘সে বাংলাদেশের হয়ে ২০ বছর খেলেছে।

সোমবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে নাসির হোসেনের ঢাকা ডমিনেটরসকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স।

ঢাকার দেওয়া ১২৯ রানের লক্ষ্যে একেবারে সহজ জয় অবশ্য পায়নি সিলেট। সিলেটের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে খেলা গড়িয়েছে শেষ ওভার পর্যন্ত। আঁটসাঁট বোলিংয়ে সিলেটকে ভালোভাবেই চেপে ধরেছিলেন অধিনায়ক নাসির হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। তবে শেষটায় থিসারা পেরেরার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে সিলেট।

মাশরাফি সিলেট
মাশরাফি সিলেট

মিরপুরে দুদলের প্রথম খেলায় ঢাকাকে ৬২ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল সিলেট। চট্টগ্রামে তাই টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক নাসির হোসেন। তবে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় বলে সৌম্য সরকার ডাক মারেন রুবেল হোসেনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে দিলশান মুনাবিরা ও রবিন দাসকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেন ইমাদ ওয়াসিম।  

দশম ওভারে ঢাকার দ্বিতীয় সেরা স্কোরার উসমান গনিকে ফেরান নাজমুল ইসলাম।৭৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ঢাকার সর্বোচ্চ ৫০ রানের জুটি গড়েন নাসির হোসেন ও আরিফুল হক। ইনিংস সেরা ৩৯ রান করে রান আউট হন নাসির। ২০ রান করেন আরিফুল। ৭ উইকেটে ১২৮ রান করে ঢাকা।

১২৯ রানের লক্ষ্যে মোহাম্মদ হ্যারিস ও নাজমুল হোসেন শান্তর ৫২ রানের জুটিতে দারুণ শুরু পায় সিলেট। কিন্তু নবম ওভারে নাসির জোড়া ধাক্কায় চাপে পড়ে সিলেট।

পরের ওভারে জাকির হাসান ফেরেন আরাফাত সানির শিকার হয়ে। এরপর রান রেট বাড়তে থাকে। একপ্রান্ত আগলে রাখা মুশফিকুর রহিম বিদায় নিলে বড় ধাক্কা খায় সিলেট। শেষ তিন ওভারে ২৪ রান দরকার ছিল তাদের, সেটা শেষ দুই ওভারে কমে দাঁড়ায় ২০ রানে। ১৯তম ওভারে সালমান ইর্শাদের ওভারে ১৭ রান নিয়ে ৪ বল হাতে রেখেই লক্ষ্য টপকে যায় সিলেট।    

তার থেকে আপনি এর চেয়ে ভালো কি প্রত্যাশা করতে পারেন। ক্রিকেটের সে কিংবদন্তি। অসাধারণ নেতা, দারুণ মানুষ। ক্রিকেটের উঠা-নামা সম্পর্কে জানেন কারণ ২০০০ সাল থেকে ক্রিকেট খেলছেন। সে কতোটা ভালো তা প্রকাশ করার মতো যথেষ্ট শব্দ আমার কাছে নেই।’

‘তার জন্য আমার সবটুকুই সম্মানের। মুসলমান হিসেবে আমরা সব সময়ই আমাদের ভাইদের সম্মান করি, সিনিয়র খেলোয়াড়দের সম্মান করি। তাকে বড় ভাইয়ের মতোই সম্মান করি। অভিভাবক হিসেবে সে যা বলে তাই আমরা অনুসরণ করি। খেলাটাকে সে খুব উপভোগ করে। আমার সঙ্গে কাজ করা সেরা মানুষদের একজন সে,’ মাশরাফির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন ইমাদ।

সোমবার ঢাকা ডমিনেটর্সের বিপক্ষে ৫ উইকেটের দারুণ জয় তুলে শীর্ষস্থান আরও মজবুদ করেছে মাশরাফির সিলেট। তবে এদিন কেবল এক ওভারই বল করেছেন অধিনায়ক। তাও শেষ ওভারে। দলের বাকি সব বোলাররা ভালো করার কারণেই নিজে আর বোলিংয়ে আসেননি বলে জানান ইমাদ। ভেতরের খবর অবশ্য পায়ের ইনজুরির কারণে এদিন বোলিং করেননি মাশরাফি।

তবে ইনজুরির কথা জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান ইমাদ, ‘না না। আমি মনে করি, আমরা ভালো বোলিং করছিলাম। তার বোলিংয়ের সুযোগ ছিল না। আমাদেরকে দিয়েই শেষ করতে চেয়েছে। গ্রেট লিডার, গ্রেট হিউম্যান বিং।

সে ২০তম ওভারটা করেছিল যা টি-টোয়েন্টিতে কঠিনতম। ওখানে ইয়র্কার করা ফ্যান্টাস্টিক। ওখানে যদি ১৫-১৬ রান দিয়ে আসতো তাহলে কিন্তু আমরা ম্যাচটা হেরে যেতে পারতাম।  কিন্তু মনে হয় সে ৬-৭ রানের মতো দিয়েছে (আসলে ৪)। তার দিক থেকে গ্রেট অ্যাফোর্ট।’

সবমিলিয়ে ড্রেসিং রুমের পরিবেশ দারুণ বলে জানান এ অলরাউন্ডার, ‘ড্রেসিংরুমের পরিবেশ খুবই ভালো। আমরা খুবই ভালো শুরু পেয়েছি। প্রতিটি দল এমন শুরু চাইবে, চার-পাঁচ ম্যাচ জিততে চাইবে। লাকিলি আমরা সবকটি ম্যাচ জিতেছি। সবচেয়ে ভালো যে বিষয়টি তা হলো, দলের প্রত্যেকের সম্পৃক্ততা আছে।

পেসার, স্পিনার, টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান, মিডল অর্ডার-লোয়ার অর্ডার প্রত্যেকের অবদান আছে। এখন পর্যন্ত আমরা দারুণ কম্বিনেশন পেয়েছি।’