অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘আজকে বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার যেভাবে বাড়ছে সেই বৃদ্ধি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ব্যাপারে আগ্রহী করে না। শিক্ষার্থীরা সিভিল সার্ভিসে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকে। তার কারণ হচ্ছে, তার জন্য চাকরি খুব জরুরি।’

শুক্রবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির আয়োজনে ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় ও ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার সমস্যাকে আমরা বিচ্ছিন্নভাবে আলোচনা করতে পারবো না। আমাদের দেখতে হবে গোটা আর্থ সামাজিক অবস্থা। এইখানে একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ কী সেটাও দেখতে হবে। দ্বিতীয়ত আমাদের সমাজে জ্ঞানের গুরুত্ব কমে গেছে। জ্ঞান দরকার হয় না। জ্ঞান ছাড়াই অনেক কাজ করা যায়। সেক্ষেত্রে জ্ঞানের যদি মর্যাদা সমাজে না থাকে তাহলে শিক্ষার আগ্রহ কীভাবে বাড়বে।’

শিক্ষা ও গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতীয় বাজেটের শতকরা অন্তত ২০ ভাগ শিক্ষা খাতে ব্যয় করা উচিত। এটি খুবই যুক্তিসঙ্গত দাবি এবং আমাদের জিডিপির অন্তত দুই ভাগ শিক্ষাখাতে দেওয়া উচিত। এগুলো না বাড়ালে আমরা শিক্ষার মান বাড়াতে পারবো না।’
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ের হিসাব কীভাবে হয়েছে সেটা আমরা নিশ্চিত জানি না। আমরা সব তথ্য সরবরাহ করতে পেরেছি কিনা জানি না। টাইমস হায়ার এডুকেশনে গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে আবার অন্য একটিতে শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসরুমের শিক্ষা এবং শিক্ষকদের গবেষণা দুটি জিনিসই গুরুত্বপূর্ণ।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘সম্প্রতি কিউএস র‌্যাংকিং নামে একটি জরিপ প্রকাশিত হয়েছে। দুটো বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান আছে যারা এই র‌্যাংকিং করে। একটি টাইমস হায়ার এডুকেশন আরেকটি কিউএস র্যাং কিং। কিউএস র্যাং কিং সমীক্ষা দেখিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ার মধ্যে ১২৭তম অবস্থানে। হায়ার এডুকেশন দেখিয়েছে ৪১৭টির মধ্যে নেই। এই র্যাং কিংগুলো কোন মানদণ্ডে হয় সেটা নিয়ে অনেক বিতর্ক থাকবে। কিন্তু একটি বিতর্কের বিষয় বলা যায় কিউএস র্যাং কিং আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।’

বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং ডাকসু নেতাদের মতামত আমলে নিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সব মতামতের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় প্রতিফলন ঘটুক। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় ৪০০ এর মধ্যে আছে কী ৫০০ এর মধ্যে নাই, ১২৭তম আছে কি ১০ এর মধ্যে নাই সেটি নয়। আমরা চাই ক্রমান্বয়ে ওপরে উঠতে। মরা চাই, ক্রমান্বয়ে উপরে উঠতে, ক্রম অগ্রগতি, ক্রম উন্নয়ন ঘটাতে। সেটি যদি ঘটাতে চাই তাহলে এইখানে অভিমত ব্যক্ত হয়েছে সেই অভিমতসমূহের প্রতিফলন রাখতে হবে।’

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, বিটিভির মহাপরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হারুন-অর-রশীদ, সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আফতাব উদ্দিন মানিক।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।