মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা; জেলার জগন্নাথপুর-চিলাউড়া বাজার সড়কটি অথৈ জলের ঢেউ এর আঘাতে ভাঙতে শুরু করেছে। সড়কটি রক্ষাকল্পে এলাকবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন। সড়ক রক্ষায় এলজিইডির অবহেলায় জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলাধীন ৫ কিলোমিটার দুরত্বের চিলাউড়া বাজার – জগন্নাথপুর সড়কটি জগন্নাথপুর পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ড ও চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নবাসীর যোগাযোগের একমাত্র ভরসাস্থল। এই সড়কের প্রায়  ৪০০ মিটার অংশ বৈঠাখালী সেতুর মুখ থেকে যাত্রাপাশা পর্যন্ত মইয়ার হাওরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। যার ফলে বর্ষা মৌসুমে সড়কের পাশ পানিতে টৈ টম্বুর থাকে। এরই মধ্যে সাম্প্রতিক বন্যায় অথৈ জলের ঢেউয়ের কবলে পড়ে সড়কটি ভাঙতে শুরু করেছে।
এলাকাবাসী সড়ক রক্ষার বিষয়টি জন-প্রতিনিধি ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীকে অবহিত করে তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। গত ১৮ই জুন উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে সড়কের ভাঙন রোধে একটি অংশে ৫০ হাজার টাকা ব্যায় সাপেক্ষে মাটি ভরা বস্তা ফেলে নামমাত্র আংশিক কাজ করা হয়। বিগত দুই/তিন দিন ধরে সড়কে ভাঙনের গতি তীব্র আকার ধারণ করলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কোনো ভূমিকা না রাখায় গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) রাত থেকে আজ শুক্রবার (১০ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত যাত্রাপাশা ও শেরপুর গ্রামের বিভিন্ন বয়সী ৪০/৫০ জন লোক স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ এনে বস্তায় মাটি ফেলে সড়কটি রক্ষার চেষ্টা চালান।
যাত্রাপাশা গ্রামের বাসিন্দা তরিকুল  বলেন, সড়কটি জগন্নাথপুর পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের উপজেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের একমাত্র পথ। সড়কের যাত্রাপাশা ও শেরপুর অংশে ভাঙন যেভাবে শুরু হয়েছে, সড়কটি বিলীন হয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে দেখে আমরা দুই গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে মাটিভর্তি বস্তা ফেলার পাশাপাশি ঢেউয়ের কবল থেকে সড়ক রক্ষায় কচুরিপানার স্তুপ আটকে রেখেছি।
শেরপুর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমান বলেন, সড়কটি রক্ষায় এলজিইডি নীরব ভূমিকা পালন করছে। মাত্র ৪০০ মিটার গার্ডওয়াল অথবা ব্লকের কাজের জন্য বার বার ধর্না দিয়ে কোনো সুফল মিলছে না। সামান্য কাজের অভাবে সড়কটি ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১০ ফুট প্রশস্ত সড়ক ভেঙে বিভিন্ন জায়গায় ৫ ফুট হয়ে গেছে। আমরা স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটি রক্ষার চেষ্টা করেছি।
যাত্রাপাশা গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর দ্বিপক গোপ বলেন, সড়কটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সড়ক রক্ষায় এলজিইডি’র ভূমিকায় আমরা হতাশ।
জগন্নাথপুর উপজেলার প্রকৌশলী (এলজিইডি) গোলাম সারোয়ার বলেন, দুই বছর আগে সড়কে ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয়েছিল। সম্প্রতি সড়কের যাত্রাপাশা অংশে কিছু ভাঙন দেখা দিলে আমরা উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে তাৎক্ষণিক কিছু সংস্কার কাজ করেছি। সড়কের সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছেন।

আমাদের বাণী ডট কম/১০  জুলাই  ২০২০/পিপিএম 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।