পটুয়াখালীর কুয়াকাটা কেন্দ্রীয় বাইতুল আরজ জামে মসজিদের দৃশ্যমান সাড়ে আট লক্ষ টাকাসহ মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্বে। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ মুসুল্লীরা দুর্নিতীগ্রস্থ পরিচালনা পর্ষদসহ ঈমাম হুমায়ুন কবিরকে বহিস্কার করেছে। পাশপাশি তসরুপকৃত টাকা পরিশোধের মুচলেকা আদায় করেছে।

মসজিদ সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন অনুদান থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়েই র্নিমান কাজ, সংস্কার, খতিব ও মুয়াজ্জিমের বেতনসহ পরিচালনা ব্যয়ভার বহন হয়ে আসছে পর্যটন নগরী কুয়কাটার জিরো পয়েন্টে অবস্থিত কেন্দ্রিয় বাইতুল আরজ জামে মসজিদ। হিসবারক্ষকের পদ না রেখেই প্রায় দশ বছর ধরে মসজিদ পরিচালনা করছেন সভাপতি শাহ-আলম শেখ, সধারন সম্পাদক সোহরাব শেখ। দীর্ঘ বছরেও কোন হিসাব প্রদান না করায় গত মে মাসের ১০ তারিখ জুম্মার দিন মুসুল্লীদের দাবীর মুখে মসজিদের আয়-ব্যায়ের হিসাবের জন্য শেখ জিয়াউর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি নীরিক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। নতুন নিরীক্ষা কমিটির সদস্যরা খোজ নিয়ে দেখেন অগ্রনীব্যাংক কুয়াকাটা শাখায় মসজিদের নামে ব্যাংক একাউন্ট শূন্য পড়ে রয়েছে।

নীরিক্ষা কমিটির সাধারন সম্পাদক নুর আলম শেখ জানান, হিসাবান্তে দেখা যায় ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালে ১০ মে পর্যন্ত সকল ব্যয়ভার বহনের পড়েও সভাপতি শাহ-আলম শেখের কাছে ৭লক্ষ ৫২হাজার ১৫৬ টাকা এবং সাধারন সম্পাদক সোহরাব শেখের কাছে ৭২ হাজার ৮৫০টাকাসহ মোট ৮লক্ষ ২৫ হাজার ৬টাকা পাওনা রয়েছে। এছাড়াও সোহরাব শেখের কাছে ৪০বস্তা খোয়া গচ্ছিত রয়েছে।

নীরিক্ষা কমিটির সভাপতি শেখ জিয়াউর রহমান জানান, ১৭ মে ২০১৯ তারিখের মধ্যে এসব টাকা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে জমাদানের জন্য নীরিক্ষা কমিটি নোটিশ প্রদান করা হলেও এখনো তারা টাকা পরিশোধ করেনি। সাবেক সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক ৩০ ডিসেম্বরের মধ্য টাকা পরিশোধের সময় চেয়েছেন। মসজিদের টাকা পরিশোধ না করা হলে আাইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুসুল্লী জানান, মসজিদের টাইলস ও এসি শাহ-আলম শেখ অনুদান হিসাবে প্রদান করলেও টাকার হিসাবে ঘাটতি দেখা দিলে এর মূল্য বাবদ ৪লক্ষ ১১হাজার ৭৯০ টাকা কেটে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, মাসিক সাড়ে নয় হাজার টাকার বেতনের মসজিদ ঈমাম হুমায়ুন কবির মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে কুয়াকাটায় ২০লক্ষ টাকার জমি ক্রয় করেছেন কিভাবে তা খতিয়ে দেখা উচিৎ। অন্য এক মুসুল্লী দাবী করেন, জেলা পরিরষদ ডাক বাংলোর কেয়ার টেকার মসজিদের সাধারন সম্পাদক সোহরাব শেখের র্নিমিত হোটেলের ইট, বালু, রট, সিমেন্ট, ফ্যান সবই মসজিদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক সাধারন সম্পাদক সোহরাব শেখ জানান, ১৯৯৬ সালে আমার মরহুম পিতা হাজী ছোমেদ শেখ জমি দান করার পরে মসজিদটি র্নিমান করা হয়। যদিও আমার কাছে ৩০ হাজার টাকা রয়েছে কিন্তু নিরীক্ষা কমিটি ৭২ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবী করেছে। সভাপতি শাহ-আলম শেখ মসজিদের হিসাব পরিচালনা করতেন। বিভিন্ন সময়ে কাজ করতে গিয়ে হিসাব লিখে না রাখার কারনে এমন গড়মিল হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি শাহ-আলম শেখের মুঠো ফোনে (০১৭১৬০৯১৩৪১) একাধিকবার কল করা হলেও বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।