রাজধানীর আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের জন্য বাজারমূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ-তিন গুণ মূল্যে ওষুধ এবং সার্জিক্যাল ও প্যাথলজি সরঞ্জাম ক্রয়ে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পৃথক ৫ মামলার অনুমতি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও উপপরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক এর প্রতিবেদন যাচাই বাছাই করে রবিবার কমিশন পৃথক এ পাঁচ মামলার অনুমোদন দেয়। এই ৫ মামলায় ওই প্রতিষ্ঠানের সাবেক ও বর্তমান ১৭ ডাক্তারসহ মোট ২৫ জনকে আসামি করা হচ্ছে। এর মধ্যে আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ইসরাত জাহানের নাম ৪ মামলাতে রয়েছে।

এই ২৫ জন হলেন, আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ইসরাত জাহান, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য পারভীন হক চৌধুরী, মাতৃসদনের সাবেক সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য মাহফুজা খাতুন, সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর (ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ) ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য চিন্ময় কান্তি দাস, সাবেক মেডিকেল অফিসার ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার (শিশু) ও বাজার দর যাচাই কমিটির সদস্য মাহফুজা দিলারা আকতার, মাতৃসদনের মেডিকেল অফিসার ও বাজার দর যাচাই কমিটি সদস্য নাজরিনা বেগম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সদস্য সচিব-বাজার দর যাচাই কমিটি জহিরুল ইসলাম, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য জেবুন্নেসা হোসেন, সিনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি) ও বাজার দর যাচাই কমিটির সভাপতি রওশন হোসনে জাহান, মাতৃসদনের সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর ( ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ) ও পরিবার পরিকল্পনার অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. লুৎফুল কবীর খান, মেডিকেল অফিসার ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য রওশন জাহান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক হালিমা খাতুন, মাতৃসদনের বিভাগীয় প্রধান (শিশু) ও বাজার দর যাচাই কমিটির সদস্য মো. আমীর হোচাইন, সাবেক সমাজ সেবা কর্মকর্তা ও বাজার দর যাচাই কমিটির সদস্য মোছা. রইছা খাতুন, সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী গোলাম আহসান, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু) নাদিরা আফরোজ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নাছের উদ্দিন, সমাজ সেবা কর্মকর্তা বিলকিস আক্তার, মেডিকেল অফিসার আলেয়া ফেরদৌসি, ঠিকাদরী প্রতিষ্ঠান মনার্ক এস্টাব্লিশমেন্টের মালিক মো. ফাতে নূর ইসলাম, মেসার্স নাফিসা বিজনেস কর্নারের মালিক শেখ ইদ্রিস উদ্দিন (চঞ্চল), সান্ত্বনা ট্রেডার্সের মালিক নিজামুর রহমান চৌধুরী।

দুদক সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কার্যাদেশ অনুযায়ী ঠিকাদারকে ওষুধ সরবরাহের বিপরীতে ৩২ লাখ ৯১ হাজার ৭২০ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়। অথচ খুচরা মূল্য ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মূল্য অনুযায়ী ওই একই ওষুধের সর্বোচ্চ মূল্য ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ২৯৮ টাকা। বাকি টাকা অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছে। এভাবে ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত চার অর্থবছরের কেনাকাটায় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ দুর্নীতিতে বিভিন্ন সময়ে ওই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দায় ও ক্ষমতার অপব্যবহারের তথ্য প্রমাণ পেয়ে দুদক মামলার অনুমোদন দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।