মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা; উজান থেকে নেমে আসা পানি ও অতি বৃষ্টিপাতের কারণে মুন্সীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। জেলার ভাগ্যকুল পয়েন্টে মঙ্গলবার পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ও মাওয়া পয়েন্টে ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিগত কয়েকদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ।

নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্মা সংলগ্ন জেলার চারটি উপজেলা সদর, টঙ্গিবাড়ী, লৌহজং ও শ্রীনগর মোট ১৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা পানিতে প্লাবিত রয়েছে। ডুবে গেছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট। পানিবন্দি রয়েছে ২৫ হাজার অধিক পরিবার। বেশ কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছে পানিবন্দি মানুষরা।

মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা স্রোতে পদ্মায় আগামী কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বন্যাকবলিত মানুষদের জন্য চাল, শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধ করার জন্য ট্যাবলেট বিতরণ করা হচ্ছে। খুলে দেয়া হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। তবে জেলার কোনো এলাকায় এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেয়নি বন্যাকবলিতরা।

এদিকে, বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়া পদ্মার চরের গ্রামগুলোর বসতবাড়িতে কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও বুক সমান পানি। এসব বসতবাড়িতে থাকা মানুষজনের সাথে বিপদে পড়েছে তাদের গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগিও। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ঘরের মাচা উঁচু করলেও পানিবন্দি হয়ে চরম বিপাকে দিন কাটাতে হচ্ছে বানভাসি পরিবারগুলোকে।

লৌহজংয়ের পদ্মার তীরের ১৬টি গ্রাম, টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ১৮টি গ্রাম, সদর উপজেলার পদ্মা তীরের ৭টি গ্রাম ও শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল ও বাঘরা ইউনিয়নের ৯টি গ্রাম বন্যার পানিতে ভাসছে। লৌহজং উপজেলার অনেক রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে, টঙ্গিবাড়ী ও লৌহজং উপজেলায় নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়েছে। মসজিদ, কবরস্থানসহ অনেক বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বন্যাকবলিত গ্রামগুলোতে বর্তমানে বিশুদ্ধ পানি ও গবাদিপশুর খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো: মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, এ পরিস্থিতিতে বানভাসি পরিবারদের সহায়তায় ৬৫ মেট্রিক টন চাল, ৭ শ’ জনের শুকনো খাবার, শিশু এবং গো-খাদ্যের জন্য ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত পরিবারের জন্য জেলায় ১৩টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত রয়েছে।

আমাদের বাণী ডট কম/২১ জুলাই ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।