ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা; প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের অবস্থা সংকটাপন্ন।

  • এর আগে জ্বর-কাশিসহ করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে গত সোমবার দুপুরে নাসিমকে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার (০৪ জুন ২০২০)  রাতে ওই পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ এসেছে বলে নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয় জানিয়েছিলেন।

  • তিন দিন পর তার স্বাস্থ্যের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও আজ শুক্রবার সকালে ব্রেইন স্টোক করে অবস্থা অবনতির দিকে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তানভীর শাকিল জয়।  সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল, আব্বুর অবস্থা ভালোর দিকে ছিল। আজকে সকালে হঠাৎ করে ব্রেইন স্টোক করেছে, এখন অপারেশন চলছে। বাবার সুস্থতার জন্য সবার দোয়া চেয়েছেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য নাসিমকে  আজ শুক্রবার সকালে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়ার কথা থাকলেও অবস্থা অবনতির দিকে যাওয়ার কারণে নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা।

  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নেতা বলেন, ‘কাল রাতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল নাসিম ভাইকে সিএমএইচে নেয়া হবে, কিন্তু সকালে অবস্থা ক্রিটিক্যাল দিকে থাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালেই অপারেশন করা হচ্ছে।’

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ সরকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রিসভায় না থাকলেও পরের মেয়াদে তাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেন শেখ হাসিনা।

  • নাসিমের সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা জাহিদ মালেক এই সরকারে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয় সামলাচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (০৪ জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ৭৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৪২৩ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৭ হাজার ৫৬৩ জনে।৫০টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৭৮৮টি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৪টি। আক্রান্তের হার ১৯.০৯ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৭১ জন এবং এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১২ হাজার ১৬১ জন। সুস্থতার হার ২১.১৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১.৩৬ শতাংশ। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানানো হয়, পুরুষ ২৯ জন ও নারী ছয়জন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৯ জন, সিলেট বিভাগের একজন, রাজশাহী বিভাগের একজন, বরিশাল বিভাগের একজন ও খুলনা বিভাগের একজন। বয়স বিশ্লেষণে জানা যায়, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৩১-৪০ একজন, ৪১-৫০ তিনজন, ৫১-৬০ ১৪ জন, ৬১-৭০ ১১ জন, ৭১-৮০ দুইজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ২২ জন, বাড়িতে ১২ জন ও হাসপাতালে আনার পথে একজন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৩৮৬ জনকে। আইসোলেশন থেকে ছাড় দেয়া হয়েছে ১৩০ জনকে।

আমাদের বাণী ডট কম/০৫ জুন ২০২০/সিসিপি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।